কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে রাস্তায় ট্রাফিকের জরিমানার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এবার কলকাতা পুলিশের দুই কনস্টেবলকে চাকরি থেকে পুরোপুরি বরখাস্ত করল লালবাজার। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, পুলিশের কনস্টেবল রাজীব রায় এবং শুভঙ্কর দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক শুক্রবার বলেন, "আমরা নিয়ম মাফিক হিসাব মেলাতে গিয়ে বিষয়টি অনেকদিন আগেই সামনে এনেছিলাম। প্রায় বছর খানেক ধরে এই দুই কনস্টেবল আমাদের স্ক্যানারে ছিল। অবশেষে বুধবার তাদের চাকরি থেকে পুরোপুরি ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।"
লালবাজার সূত্রে খবর, রাজীব রায় টালিগঞ্জ থানায় কর্মরত ছিলেন। আর শুভঙ্কর দেব ছিলেন ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত। কিন্তু ঘটনাটি যখন ঘটেছিল অর্থাৎ 2016 থেকে 2019 সালে এই দুই কনস্টেবল হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডে কর্তব্যরত ছিলেন। এই দুই কনস্টেবলকেই পুলিশের সমস্ত সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডেপুটি কমিশনারের অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
ট্রাফিক সার্জেন্টরা রোজ জরিমানার টাকা জমা করেন সংশ্লিষ্ট গার্ডের কাছে। লালবাজার সূত্রের খবর, এই দুই কনস্টেবল হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত ছিলেন। তাদের কাছে জরিমানার টাকা জমা করতেন সেখানে থাকা সার্জেন্টরা। ওই টাকা ট্রেজারিতে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। সেই বিষয়টি সামনে আসার পর কলকাতা পুলিশের একজন ডিসি'র নেতৃত্বে তদন্ত শুরু করে লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগ।
আরও পড়ুন: ফের প্রাথমিক নিয়োগে স্বজনপোষণের অভিযোগ, রিপোর্ট দিতে নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
তদন্তে উঠে আসে যে, প্রায় তিন বছরে 22 লক্ষ টাকা জমা না দিয়ে নিজেদের পকেটে ভরেছেন তাঁরা। কিন্তু ওই দুই কনস্টেবল খাতায়-কলমে দেখিয়েছে টাকা জমা পড়েছে। কিন্তু তার হিসাবে মিলছিল না। এর জন্য জমা দেওয়ার ভুয়ো নথিও তৈরি করেছিলেন তাঁরা। সেগুলিও পরীক্ষা করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। প্রথমে তাঁদের সাসপেন্ড করা হলেও এবার তাদের পাকাপাকিভাবে কলকাতা পুলিশের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।