কলকাতা, 30 অক্টোবর: রাজ্য-কেন্দ্রের দুই সরকারের মধ্যে সম্পর্ক কার্যত সাপে-নেউলের মতো । 100 দিনের কাজের টাকা থেকে একাধিক খাতে বকেয়া মেটাতে বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে তৃণমূল কংগ্রেস । এই পরিস্থিতিতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মাধ্যমে প্রায় 500 কোটি টাকা কেন্দ্রীয় অনুদান পেতে চলেছে কলকাতা পৌরনিগম । প্রতি বছর 100 কোটি করে আগামী 5 বছরে মিলবে এই 500 কোটি টাকা । এই টাকায় কলকাতার নিকাশি পরিকাঠামো ও পরিবেশ রক্ষায় পরিকাঠামো তৈরি করার শর্তে দেওয়া হচ্ছে বলেই খবর কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে ।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে এই অনুদান সংক্রান্ত এক বৈঠক হয় সম্প্রতি । সেখানে কলকাতা পৌরনিগমের তরফে একাধিক পরিকল্পনা দেখানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের অধিকারিকদের কাছে । সবটা খতিয়ে দেখে বিশ্লেষণ করেই এই টাকা অনুদান দেওয়ায় সবুজ সংকেত দেন তাঁরা । তবে শর্ত দেওয়া হয় যে কলকাতা পৌরনিগমের তরফে অধিকাংশই নিকাশি পরিকাঠামোর মানোন্নয়নের পরিকল্পনা দেখালেও যেহেতু দূষণেও কলকাতার অবস্থা ভালো নয়, তাই অনুদানের সব টাকা নিকাশি পরিকাঠামো খরচ করা যাবে না । পরিবেশ রক্ষায় এই অনুদানের টাকায় বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে হবে ।
বৈঠকে কলকাতা পৌরনিগমের তরফে দিল্লিতে হাজির ছিলেন পৌর কমিশনার বিনোদ কুমার, নিকাশি বিভাগের ডিজি শান্তনু ঘোষ । কেন্দ্রের এই বৈঠকে শুধু কলকাতা নয় চেন্নাই, মুম্বই, হায়দরাবাদ, দিল্লির মতো বেশ কয়েকটি পৌরনিগমের প্রতিনিধিরাও ছিলেন । কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে খবর, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই-সহ যে সমস্ত পৌরনিগম এসেছিল, সেগুলির মধ্যে সব থেকে বেশি কলকাতাকে আর্থিক অনুদান বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র ।
এই টাকা যেমন যেমন ধাপে ধাপে ঢুকবে, তেমন ভাবেই নিকাশি ও পরিবেশ রক্ষায় পরিকাঠামোর কাজে লাগানো হবে । প্রথম ধাপে হবে মিল্ক কলোনি, পামার বাজার, গুলশান কলোনি-সহ কয়েকটি জায়গায় ছোট মাপের নিকাশি পাম্পিং স্টেশন । সন্তোষপুর পাম্পিং স্টেশনের সংস্কার । ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় জমা জলের ভোগান্তি থেকে সুরাহা পাবেন কয়েক লাখ নাগরিক । সংযুক্ত এলাকায় 30 কিলোমিটারের বেশি কাটা হবে নিকাশি খাল । পরিবেশ রক্ষায় নতুন পুকুর কাটা হবে বেশ কয়েকটি । নতুন ব্যারাজ হবে । দুর্যোগের পূর্বাভাস দিয়ে ওয়ার্নিং সিস্টেম প্রযুক্তি হবে । বৃষ্টির জল ধরার জন্য একাধিক ছোট ছোট জলাশয়ও করা হবে । ভূগর্ভস্থ জলের পুনর্নবীকরণ করা হবে ।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পৌরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেহালা জোকা এলাকার নিকাশি খাল সংস্কারের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে । থাকছে পরিবেশ রক্ষায় জলাশয় তৈরি বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও ভূগর্ভস্থ জলের রিফলিং । এই টাকা মূলত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের । সেই মতো আমরা প্রকল্পের রিপোর্ট তৈরি করে নিয়ে গিয়েছিলাম । দ্রুত কয়েক দিনের মধ্যেই কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে ।’’
আরও পড়ুন: বর্জ্য পদার্থ আলাদা করতে আরও ছ’ হাজার নীল-সবুজ বালতির কলকাতা পৌরনিগমের