কলকাতা, 14 ডিসেম্বর: পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ ধামা চাপা দিতে মৃতের পরিবার ও আত্মীয়দের অন্য একটি খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে । দু'টি খুনের ঘটনা এবং পুলিশের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ।
একইসঙ্গে নদিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি)-কে এই রায়ের কপি পাঠানোর নির্দেশ দিল বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ ও বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। মুরুটিয়া থানার এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসপিকে ।
10 বছর পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল এই মামলাকারীর বিরুদ্ধে। আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তিনি । তাঁদের অভিযোগ, 26 অগাস্ট রাত 1 টার সময় নদিয়া জেলার মরুটিয়া থানার পুলিশ সেই 10 বছর আগের মাদক মামলায় ফের গ্রেফতার করতে আসে তাঁকে । মোহন মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী পুলিশকে জানায় তাঁরা আগেই জামিন পেয়েছেন । অভিযোগ এই কথা শোনার পরেও পুলিশ 3 লক্ষ টাকা দাবি করে । টাকা না দেওয়ায় পুলিশ মোহন মণ্ডলের ভাই শওকত মণ্ডলকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় । ওই দিন ভোরে একটি বাঁশ বাগানে শওকত মণ্ডলের দেহ পাওয়া যায় । ভাইয়ের স্ত্রী মঞ্জুরা বিবি পুলিশের অতিসক্রিয়াতার কারণে মামলা দায়ের করেন আদালতে ।
ঐদিন রাতেই মোহন মন্ডলের স্ত্রী মাফুজা বিবিকে ফের পুলিশ থানায় তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ । একটি খুনের মামলায় মাফুজা বিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ । সেই মামলায় মোহন মণ্ডলের পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনে তারা । যাঁরা ঘটনায় সাক্ষী ছিলেন তাঁদেরকেও ওই খুনের মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর মামলায় এর আগে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ থানার তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ৷ 18 সেপ্টেম্বর থানার তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে সরাসরি পুলিশ সুপারকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি । বর্তমানে এসপি এই তদন্ত চালাচ্ছেন ।
আবার পুলিশ হেফাজতে মৃত ব্যক্তির স্ত্রীকে অন্য একটি খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে জামিনের মামলা উঠেছিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে । সেই মামলায় ডিভশন বেঞ্চ যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল তাতে পুলিশের বিরুদ্ধে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সারবত্তা আছে বলে ইঙ্গিত ছিল আদালতের রায়ে । আজ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আগাম জামিনের শুনানিতে সিবিআইকে 30 দিনের মধ্যে নথি হাতে নেওয়ার নির্দেশ দেয় । তার পরের দু'মাসের মধ্যে গোটা তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে ।
আরও পড়ুন: