কলকাতা, 22 নভেম্বর: কলকাতা শহরে প্রত্যেকটি থানার সিসিটিভির রক্ষণাবেক্ষণের রিপোর্টের পাশাপাশি এ বার প্রত্যেকটি থানার রোজকার সিসিটিভি ফুটেজের কপি পাঠাতে হবে লালবাজারে । কলকাতা পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে ।
এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক বলেন, "কলকাতা পুলিশ যাতে আরও ভালোভাবে নাগরিকদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারে এটি তারই একটি ব্যবস্থা । এর মধ্যে অন্য কোনও বিষয় নেই ।" কিন্তু এই একই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের আইপিএস মহলের অন্য একটি মহল দাবি করছে, গত পাঁচ থেকে ছয় বছরে কলকাতা পুলিশের আওতাধীন বিভিন্ন থানায় বিভিন্ন সময়ে লক-আপের মধ্যে বন্দির রহস্যমৃত্যু থেকে শুরু করে থানার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন বিভিন্ন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে । সম্প্রতি উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় আসা এক ব্যক্তির রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে কলেজস্ট্রিট চত্বর । সেখানে প্রশ্ন ওঠে পুলিশ তাঁকে একটি মোবাইল চুরির ঘটনায় থানায় ডেকে এনে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে তাঁকে হত্যা করেছে । সেই ঘটনায় যথেষ্ট কালিমালিপ্ত হতে হয়েছে কলকাতা পুলিশকে ।
এছাড়াও বছর কয়েক আগে উত্তর কলকাতার বটতলা থানায় লক-আপে থাকা এক বন্দির রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটে । সেই ঘটনাতেও তৎকালীন বটতলার অফিসার ইনচার্জকে তড়িঘড়ি সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ৷ এই প্রকার ঘটনা যাতে আর কোনও ব্যক্তির সঙ্গে না ঘটে এবং যাতে কলকাতা পুলিশের মুখ নষ্ট না হয়, তার জন্যই এ বার কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল প্রত্যেকটি থানাকে এই নির্দেশিকা পাঠালেন ।
সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় প্রত্যেকটি থানার অফিসার ইনচার্জ এবং অতিরিক্ত অফিসার ইনচার্জদের সাফ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, প্রতিটি থানার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ প্রতিদিন লালবাজারে পাঠাতে হবে । বর্তমানে কলকাতা পুলিশের নয়টি ডিভিশন রয়েছে । প্রত্যেকটি ডিভিশনে রয়েছেন একজন করে ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ বা ডিসি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক । তাঁর অধীনে রয়েছেন অতিরিক্ত উপনগরপাল এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশের কর্মীরা । বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক দিনের সিসিটিভি ফুটেজের কপি মেল করে পাঠিয়ে দিতে হবে ডিভিশনাল ডিসিদের । এরপর ডিভিশনাল ডিসিরা সেই কপি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেবেন অতিরিক্ত উপনগরপাল কিংবা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারদের । তাঁরা ভালোভাবে খতিয়ে দেখবেন যে বিভিন্ন ডিভিশনের যে কটি থানা রয়েছে সেই প্রত্যেকটি থানায় কখন কোন সময় কোন ব্যক্তি আসছেন এবং কোন কোন পুলিশ কর্মী থানার মধ্যে কী অবস্থায় রয়েছেন । এরপরেই সেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে লালবাজারে নগরপালের টেবিলে ।
এছাড়াও থানায় কারা আসছেন, কারা যাচ্ছেন, কারা রয়েছেন, কতক্ষণ রয়েছেন, কোন কোন পুলিশকর্মী থানার মধ্যে কাদের সঙ্গে কথা বলছেন, এই সমস্ত কিছু জানার জন্য এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে ।
আরও পড়ুন: