কলকাতা, 9 নভেম্বর: দেশজুড়ে নিষিদ্ধ সাধারণ আতশবাজি ৷ একমাত্র পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজিই পোড়ানোর অনুমতি রয়েছে ৷ আর এখানেই অনেকের প্রশ্ন, সবুজ বাজি পোড়ালে কোন রঙ দেখা যাবে ? তা নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় আছে। সবুজ বাজি থেকে সেই একই রংয়ের আলো বেরতে পারে মনে হলেও তা হওয়ার কথা নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, লাল-হলুদ-সাদা-কমলা রংয়ের আলো পেলেও এই বাজি থেকে সবুজ আলো মিলবে না ৷ কারণটা কিন্তু চমকে দেওয়ার মতো ৷
বাজি বাজার থেকে আতশবাজি কেনার সময় সেটা সবুজ বাজি কি না, তা দেখে নিতে হচ্ছে ৷ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে কিউআর কোড স্ক্যান করেই হচ্ছে কেনাকাটা ৷ কিন্তু এই বাজি পোড়ালে সবুজ আলো উৎপন্ন হবে কি ? না, তেমনটা হওয়ার কথা নয় ৷ তাই সবুজ আলো হবে, এমন বাজি মোটের উপর পাওয়া যাচ্ছে না ৷ কোথাও কোথাও অবশ্য এমন বাজির দেখাও মিলছে ৷ তবে সেটা স্বস্তির চেয়ে অনেক বেশি অস্বস্তির কারণ।
সবুজ বাজি কেনার আগে তাতে কী উপকরণ রয়েছে তা ভালো করে দেখে নিতে হবে ৷ কারণ সবুজ আলো তৈরি করতে বেরিয়ামের মতো রাসায়নিক মেশানো হয় ৷ আর বেরিয়াম মনো ক্লোরাইড লবণ বা বেরিয়াম নাইট্রেট বা বেরিয়াম ক্লোরেট- এই রাসায়নিক পদার্থগুলি মানুষের দেহের ভয়ঙ্কর ক্ষতি করে ৷ অতএব পরিবেশকর্মীরা বলছেন, সবুজ বাজি কিনুন। কিন্ত সবুজ বাজি থেকে দূরে থাকুন।
পরিবেশবান্ধব বাজির কিউআর কোড আসল হলে সেই বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থা সবুজ আলোর কোনও আতশবাজি তৈরি করবে না ৷ বাজির বাক্সে 'বেরিয়াম বর্জিত' শব্দটি লেখা থাকবে ৷ পরিবেশ বিজ্ঞানী সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলেন, "বেরিয়ামের মতো রাসায়নিকগুলি রঙিন আলোয় তৈরি করতে বাজিতে ব্যবহৃত হয় ৷ বিশেষত সবুজ আলো তৈরি করতেই হয় এর ব্যবহার ৷ সাদা আলোর জন্য লাগে আলোমিনিয়াম চূর্ণ। লাল আলোর জন্য লাগে লোহা চুর ৷ এই সমস্ত রাসায়নিক শীরের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে ৷ ফলে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েই এই বেরিয়াম বাজিতে ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ৷"
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে শ্বাসযন্ত্রে জ্বালা থেকে শুরু করে ত্বকে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট এবং এমনকী ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ পর্যন্ত হতে পারে ৷" ফলে পরিবেশবান্ধব বাজি, যাকে সবুজ বাজি বলা হয়, সেই সবুজ বাজিতে সবুজ আলোই নিষিদ্ধ ৷ পাশাপাশি, সবুজ বাজি হলেও শিশুদের এই বাজি থেকে দূরে রাখা ও সাইলেন্স জোনগুলিতে বাজি না-ফাটানোর কথা মাথায় রাখতে আবেদন করছেন পরিবেশবিদরা ৷
আরও পড়ুন: গ্রামে দীপাবলি উদযাপনে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা, শিশুরা বাজি পোড়ানোর বায়না করলে পাঠানো হয় মামাবাড়ি