কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি: খড়গপুর আইআইটির ছাত্র ফাইজান আহমেদের (Kharagpur IIT Student Death Case) মৃত্যুতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে নতুন করে মতামত জানতে ময়নাতদন্তের অবসরপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ চিকিৎসক একে গুপ্তাকে দায়িত্ব দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছেন । পুলিশ রিপোর্ট (Police Report on Kharagpur IIT Student Death Case) দিয়ে জানিয়েছে, ওই ছাত্র অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন । যা নিয়ে কোনও মতামত না দিলেও রিপোর্ট নিয়ে সন্দিহান বিচারপতি মান্থা ৷ তিনি এ দিন তাঁর নির্দেশে বলেছেন, ডাক্তার একে গুপ্তার কাছে এই মামলার যাবতীয় নথি পাঠাতে হবে ।
অন্যদিকে, খড়গপুর আইআইটির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, এই মৃত্যুতে প্রতিষ্ঠানের কোনও দায় নেই । আইআইটির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়েরের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আইআইটির । যদিও এই ঘটনায় সাতজন ছাত্রের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছে । আইআইটি-কে নতুন করে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা । তিন সপ্তাহ পরে মামলার ফের শুনানি রয়েছে ।
এ দিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক , ছাত্র, পুলিশ - এই চারটে সংস্থার ভূমিকা আছে মৃত্যুর ঘটনায় । গত বছর
ফেব্রুয়ারিতে ব়্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছিল । তারপরে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি । গরমের ছুটিতে বাড়ি না গিয়ে হস্টেলে ছিল ছেলেটি । কারণ তার বাড়িতে নেটের সমস্যা । 70টা আবেদন করার পরেও কোনও চাকরির ডাক পায়নি সে । বন্ধুরা পেয়ে গিয়েছে । এই অবসাদে সে আত্মহত্যা করে ।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, 10টা ট্যাবলেট কিনেছিল । তার মধ্যে ও চারটে খেয়েছিল । দেহে বিষ পাওয়া যায়নি । কোনও মারামারির ঘটনাও ঘটেনি ।"
আরও পড়ুন: খড়গপুর আইআইটির ছাত্রের রহস্যমৃত্যুতে 20 ফেব্রুয়ারি পুলিশ চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ হাইকোর্টের
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র বলেন, আইআইটি নিজস্ব তদন্ত রিপোর্ট দিয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখার দাবি করে । কমিটি তাদের প্রস্তাব ও পরামর্শ প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে । মৃতের বাবা এখানে আবেদনকারী হলেও তাঁদের রেকর্ডে মায়ের নাম ছিল বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফের আইনজীবী । তাঁর দাবি, খুন করার অভিযোগ ভিত্তিহীন । এমনকী র্যাগিংয়ের জন্যেও এই ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি তাঁর ।
অনিন্দ্য মিত্রের অভিযোগ, মালয়েশিয়াতে নতুন ক্যাম্পাস খুলছে আইআইটি । সেখানে জমি বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে । তার মধ্যে এই ধরনের ঘটনায় আইআইটির সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে । ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তাদের রিপোর্টে যাদের নামে র্যাগিঙের অভিযোগ রয়েছে তা উল্লেখ করেছে । ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, তার জন্য কী পদক্ষেপ করা দরকার তারও উল্লেখ করেছে কমিটি । সাতজনের বিরুদ্ধে র্যাগিং নিয়ে নতুন অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে । কিন্তু হতাশা থেকেই ওই ছাত্র আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করা হচ্ছে, মত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীর ।