কলকাতা, 1 মে: আপাতত স্বস্তি তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের ৷ তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা গ্রহণ করলেন না বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। যদিও অপরূপা পোদ্দারের মামলাটি জনস্বার্থ মামলা হিসাবে দায়ের করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি মান্থা ৷ সেই মর্মে সোমবার মামলাকারীকে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা দায়েরের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি ৷
এদিন শুনানিতে বিচারপতি মান্থা মামলাকারী আইনজীবীর উদ্দেশে স্পষ্ট জানান, মামলাকারী সরাসরিভাবে প্রভাবিত বা ক্ষতিগ্রস্ত নন ৷ এই মামলা জনস্বার্থ মামলা হিসাবে গণ্য হওয়া উচিত। এই যুক্তিতে মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি একই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতির এজলাসে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। গ্রুপ- সি নিয়োগের জন্য নিজের লেটার প্যাডে নাম লিখে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরির সুপারিশ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। এই অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।
সেই মামলার শুনানিতে এদিন মামলাকারীর আইনজীবী কুমারজ্যোতি তিওয়ারি সওয়ালে বলেন, "তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের তরফ থেকে তৎকালীন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সুপারিশ সংক্রান্ত একটা চিঠি দেওয়া হয়েছিল। গ্রুপ-সি চাকরির জন্য সেই চিঠিতে চার জনের নামও দিয়েছিলেন সাংসদ। এই নামগুলি পরবর্তীকালে কমিশনের তরফ থেকে যে বিকৃত (ম্যানুপুলেটেড) ওএমআর আপলোড করা হয়েছিল সেখানে দেখা যায়।" পাশাপাশি মামলাকারীর দাবি, যদি সিবিআই মামলার তদন্ত করে, তবে বিষয়টিতে স্বচ্ছতা থাকবে। সেক্ষেত্রে মামলাকারীর আইনজীবীর যুক্তি, সিবিআই এই সংক্রান্ত মামলার তদন্ত আগে থেকেই করছে।
সেই সঙ্গে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি একজন সাংসদ। তাঁকে যথেষ্ট প্রভাবশালী বলেও আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী। অন্যদিকে অপরূপার তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, "মামলাকারীর বিরুদ্ধে অপরূপা পোদ্দার গত 21 এপ্রিল পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বিকালে উনি নিজের স্বামীকে বিষয়টি জানান। তারপর গত 24 এপ্রিল অভিযোগ দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। কারণ সোশ্যালমিডিয়ায় তিনি অশ্লীল ভাষায় কথা বলছিলেন।" মামলাকারীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলেও আদালতে জানান অপরূপা পোদ্দারের আইনজীবী। সেই সঙ্গে আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, "মামলাকারী শুধু একজন আইনজীবী নন, তিনি এর আগেও অপরূপা পোদ্দারের ইলেকশন পিটিশনও চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।"
দু'পক্ষের সওয়াল জবাবের পর বিচারপতি মান্থা তাঁর নির্দেশের পর্যবেক্ষণে বলেন, "আপনারা যে বিষয়গুলি বলছেন, তাতে বলা যায় না উনি স্বচ্ছ বা উনি দোষী। অপরূপা পোদ্দার একজন জনপ্রতিনিধি। এই মামলা জনস্বার্থ মামলা হিসেবে দায়ের করা উচিত। রাজ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত দূর্নীতি নিয়ে সকলেই ভাবিত। কেউ বিষয়টি নিয়ে উৎসাহিত নয়। এই বেঞ্চের জনস্বার্থ মামলা নেওয়ার এক্তিয়ার নেই। আপনারা এই বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে পারেন।"
আরও পড়ুন: সুপ্রিম নির্দেশের পর প্রাথমিকের 2 মামলার নথি চাইল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কার্যালয়