কলকাতা, 20 সেপ্টেম্বর: অনামিকা রায়কে চাকরি দিতে দেরি কেন ? মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিবকে জবাবদিহি করে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিবকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে এত দেরি কেন হল ? কার বা কাদের গাফিলতি রয়েছে । পাশাপাশি পর্ষদের ক্লার্ক-সহ অন্যান্য আধিকারিকদের নাম পদ-সহ বিস্তারিত তথ্য রিপোর্টে জানাতে হবে। 28 সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, গতকাল বিচারপতি পর্ষদের আইনজীবীকে ধমক দেওয়ার পরই এদিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অনামিকা রায়কে নিয়োগপত্র প্রদান করেছে । 16 মে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ববিতা সরকারের চাকরি অনামিকা রায়কে দিতে নির্দেশ দেন। কারণ ববিতা সরকারের প্রাপ্ত নম্বরের থেকে অনামিকা রায়ের নম্বর বেশি ছিল। নির্দেশ মতো 18 জুলাই স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপারিশপত্র পাঠায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। 3 অগস্ট নথি যাচাই করার জন্য অনামিকাকে ডাকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
11 অগস্ট পুলিশের তরফে যাচাইয়ের জন্য নথি পাঠানো হয়। 3 অগস্ট নথি যাচাই করার জন্য ডেকে 11 অগস্ট ওই নথি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পাঠানো হল কেন, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তা ছাড়া 16 মে নির্দেশ দেওয়ার পরেও অনামিকাকে চাকরি দিতে এত দিন হল কেন? জবাবদিহি করতে হবে পর্ষদকে। 18 সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান, পুলিশ ভেরিফিকেশনের রিপোর্ট তাঁরা হাতে পাননি। কিন্তু এদিন রাজ্যের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক আদালতে জানান, গত 15 সেপ্টেম্বর ওই রিপোর্ট চলে এসেছে।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতির প্রশ্ন, যে রিপোর্ট 15 সেপ্টেম্বর এসে গিয়েছে, সেই রিপোর্ট হাতে আসেনি বলছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী অবশ্য আদালতে জানান, গত 15 সেপ্টেম্বর বিকেল 5টার পর চিঠি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরে পৌঁছয়। বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তিনি বলেন, "16 এবং 17 সেপ্টেম্বর পর্ষদের দফতর বন্ধ ছিল। তাই 18 সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির আগে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি আদালতকে জানানো যায়নি। বিচারপতি পুরোটা শুনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন যে, "এবার শিক্ষামন্ত্রী এবং পর্ষদের সচিবকে বলে চিঠি পর্ষদের দফতর থেকে কি তাঁকেই নিয়ে আসতে হবে?"
উল্লেখ্য, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী অধিকারীর নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি, তালিকায় পরিবর্তন করে করা হয়েছে বলে চাকরিটি পান তালিকায় নাম থাকা ববিতা সরকার নামে এক প্রার্থী। প্রায় চার বছরের বেতনের টাকা অঙ্কিতা অধিকারীকে ফেরত দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি। কিন্তু ববিতা সরকারের সেই চাকরি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। পরে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তালিকায় থাকা আরও এক প্রার্থী অনামিকা রায়। তিনি দাবি করেন, ববিতা সরকার তাঁর থেকে 2 নম্বর কম পাওয়ার সত্ত্বেও কমিশনের ভুলে চাকরি পেয়েছেন তিনি। পরে যাচাই করে দেখা যায় দাবি সঠিক। ফলে ববিতার চাকরিও বাতিল করেন বিচারপতি। পর্ষদকে নির্দেশ দেন অনামিকা রায়কে চাকরি দিতে ৷
আরও পড়ুন: মামলা করে চাকরি পেয়েছিলেন ! এসএসসি'র ভুলে এবার নয়া বিতর্কে ববিতা