কলকাতা, 5 অক্টোবর: যোগেশ চন্দ্র ল'কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষা সুনন্দা গোয়েঙ্কা ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তিনি কলেজে প্রবেশ করতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একই সঙ্গে, বিচারপতি নির্দেশে জানিয়েছেন, তাঁকে তাঁর প্রিন্সিপাল হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতাও আদালতে প্রমাণ করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষিকা অচিনা কুণ্ডুকেও এদিন পদ থেকে সরিয়েছে হাইকোর্ট।
এক্ষেত্রে আইনজীবী অর্ক কুমার নাগকে স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করেছে আদালত। নির্দেশে বিচারপতি জানিয়েছেন, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সে প্রিন্সিপালের ঘরে তালা মেরে দেবে। একই সঙ্গে, একজন প্রবীণ শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে টিচার ইনচার্জ হিসাবে নিয়োগ করার জন্য নাম আদালতে জানাবে। চারু মার্কেটে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে রিপোর্ট পেশ করতে হবে শুক্রবার সাড়ে 12টার মধ্যে।
কলেজের পরিচালন কমিটির বৈঠকও স্থগিত করল আদালত। বিবেকানন্দ বসু নামে এক আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর হাত ছিল এই বেআইনি নিয়োগে। হাইকোর্টে আবেদনকারী আইনজীবী বিবেকানন্দ বসু এদিন বলেন, "2001-এ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। সুপারিশ করা হয় এবং অগস্ট মাসে তাঁকে নিয়োগ করা হয়। এম কম, এলএলবি, বিএড ইউজিসি গাইডলাইন অনুযায়ী পিএইচডি বা 10 বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। কিন্তু তাঁর শিক্ষকতার কোনও অভিজ্ঞতা নেই।" 2001 থেকে সরকারি কলেজ হয় এটি ৷ এর আগে বেসরকারি কলেজ ছিল এটি এমনটাও জানিয়েছেন আবেদনকারী।
কলেজের আইনজীবী অবশ্য বলেন, "সুনন্দা গোয়েঙ্কা ভট্টাচার্য প্রিন্সিপাল 1998-এ নিয়োগ হন শিক্ষিকা হিসেবে ৷ 2015 সালে প্রিন্সিপাল হিসাবে নিয়োগ হন।" বিচারপতি প্রশ্ন করেন, "নেট বা সেট-এ পাশ করেছিলেন ? ওনাকে ফোন করুন।" সঙ্গে সঙ্গে এজলাস থেকে প্রিন্সিপালকে ফোন করেন আবেদনকারীর আইনজীবী বিবেকানন্দ বসু। কলেজের অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কা ফোনে উত্তর দেন, "আমি 1998 সালে নিয়োগ হয়েছিলাম। তখন ইউজিসির এই নিয়ম ছিল না। কারণ এটা বেসরকারি কলেজ ছিল। পে-প্যাকেজ ছিল।"
আরও পড়ুন: আপাতত অভিষেককে তলব নয়, ইডিকে তদন্ত শেষের সময়সীমাও বেঁধে দিল হাইকোর্ট
কিন্তু আবেদনকারী আইনজীবী বিবেকানন্দ বসু বলেন, "এই নিয়োগ সঠিক নয় ৷ ইউজিসির নিয়ম মেনে হয়নি। আবেদনকারীর সুরক্ষার প্রয়োজন। মহম্মদ সাবির আলি, দীপঙ্কর মন্ডল, মৌসুমী শীল, শাবাজ আলি খান, রিয়া দেবনাথ এরা হুমকি দিচ্ছে তাকে।" তার ঈঙ্গিত এই নিয়োগের পিছনে রয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। রাজ্যের তরফে জানানো হয়, "চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে 9 অগস্ট। আজ এফআইআর দায়ের হয়েছে।"
বিচারপতি রাজ্যের কাছে শুক্রবারই রিপোর্ট তলব করেছেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এদিন ফের মন্তব্য করেন, "যেখানেই দুর্নীতি মাথাচারা দেবে আমি সেখানেই হস্তক্ষেপ করব।"