কলকাতা, 2 অগস্ট: এক বছর আগে শিক্ষকের বদলির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট ৷ কিন্তু হাইকোর্টের সেই নির্দেশ পালন না-করায় স্কুলের সভাপতিকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শিলিগুড়ির খড়িবাড়ি ব্লকের বাতাসি শাস্ত্রীজী হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক রামপ্রসাদ মণ্ডল। অভিযোগ, তিনি বদলির আবেদন করলেও তা কার্যকর হয়নি। এরপরই হাইকোর্ট সেই মামলায় অবিলম্বে শিক্ষককে বদলির নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷ কিন্তু বিচারপতির সেই নির্দেশ এক বছর পরও কার্যকর হয়নি ৷ যা নিয়েই বুধবার উষ্মাপ্রকাশ করলেন বিচারপতি ৷ স্কুলের তরফে আইনজীবী বিক্রমাদিত্য ঘোষ জানান, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণেই বদলির আবেদন এগোনো যায়নি। স্কুল সভাপতি মুকুল কুমার সরকারও এদিন আদালতে হাজির ছিলেন। তিনি পেশায় একজন আইনজীবীও বটে। আর তা জেনে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিচারপতি ৷ তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, শিলিগুড়ি আদালতের একজন আইনজীবী আদালতের নির্দেশ দেখার পরও এতদিন ব্যাবস্থা গ্রহণ করেননি!
শিক্ষকের অভিযোগ, উৎসশ্রীতে বদলির আবেদন করার পরও তাঁর বদলি হয়নি। ম্যানেজিং কমিটি প্রত্যেক বার কোনও কারণ ছাড়াই তাঁর আবেদন বাতিল করে বলেও অভিযোগ। বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই শিক্ষক। সেই মামলাতেই গত বছর 23 মার্চ অবিলম্বে শিক্ষককে বদলির নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। এক সপ্তাহের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করতে বলা সত্ত্বেও কিছু করা হয়নি বলে অভিযোগ। এদিন ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "স্কুল প্রেসিডেন্ট সম্পূর্ণ অযোগ্য।" তাঁকে যাতে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া হয় তার জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ৷
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীতে পাক চর সন্দেহ মামলায় সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
অযোগ্য প্রেসিডেন্টের পদে থাকার অধিকার নেই বলে এদিন মন্তব্য করেন বিচারপতি। এদিন ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে প্রধান শিক্ষিকা, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটিকে 15 মিনিটের মধ্যে আন্ডারটেকিংও দিতে বলেন ৷ নির্দেশে জানান, সাতদিনের মধ্যে বদলির অনুমতি দিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শককে নথি পাঠাতে হবে এই মর্মে। মামলাকারী শিক্ষকের তরফে আইনজীবী সঞ্জীব দাস জানান, ম্যানেজিং কমিটি ও স্কুলকে বার বার নোটিশ করা সত্ত্বেও ওরা আদালতে হাজির হয়নি। শেষে বিচারপতি রুল জারি করেন গত 4 জুলাই। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রেসিডেন্টকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। শেষে প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আন্ডারটেকিং দিয়েছেন। 10 দিনের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আদালতে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের।