কলকাতা, 14 অগাস্ট : তিন মাসের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকের পদে নিয়োগ করতে হবে চাকরিপ্রার্থীদের ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ৷ কিন্তু মানা হয়নি সেই নির্দেশ ৷ আজ আদালতে শুনানির সময় প্রাথমিক শিক্ষা সচিবের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ৷ নির্দেশ অমান্য করায় সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন তিনি ৷ পাশাপাশি 19 সেপ্টেম্বর স্বশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় ৷
2014 সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ৷ জানানো হয় 2015-র 11 অক্টোবর হবে TET-এর লিখিত পরীক্ষা ৷ পরীক্ষায় বসেন প্রায় 23 লাখ প্রার্থী ৷ পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর কয়েকজন প্রার্থী RTI করেন ৷ তাঁরা জানতে পারেন, 11টি মাল্টিপল প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর হিসেবে যে চারটি অপশন ছিল তার সবকটিই ছিল ভুল ৷ এরপর শতাধিক TET-এ অসফল প্রার্থী সঠিক তদন্তের জন্য হাইকোর্টে মামলা করেন ৷ বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় এই মামলার জন্য বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে এক্সপার্ট কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন ৷ পাশাপাশি কমিটিকে খামবন্দী করে রিপোর্ট দিতে বলে হাইকোর্ট ৷ সেইমতো রিপোর্ট দেয় বিশ্বভারতী ৷
মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী আলি আহসান আলমগীর বলেন, "বিশ্বভারতীর রিপোর্ট পাওয়ার পর 2018 সালের 3 অক্টোবর বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় জানান, 2014-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী 2015-তে যে TET পরীক্ষা হয়েছিল তাতে 6টি প্রশ্নের উত্তর ভুল রয়েছে ৷ তাই যে সমস্ত প্রার্থী ওই 6টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁদের প্রত্যেককে নম্বর দিতে হবে ৷ নম্বর পাওয়ার পর যদি যোগ্য বিবেচিত হয় তাহলে আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকের পদে নিয়োগ করতে হবে ৷"
বিচারপতির দেওয়া তিন মাসের সময়সীমা শেষ হয় চলতি বছরের 3 জানুয়ারি ৷ কিন্তু মানা হয়নি হাইকোর্টের একটি নির্দেশও ৷ এরই মধ্যে মামলা প্রথমে গড়ায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ৷ সেখান থেকে সুপ্রিমকোর্টে ৷ এরপর প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদের তরফে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয় ৷ তার পরিপ্রেক্ষিতেই আবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলাটি বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে । প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদের সেই আবেদন গতকাল খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ ।
আজ একাধিক চাকরিপ্রার্থী বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে আবেদন জানান যে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আদালতের নির্দেশ মানছে না ৷ তাতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি ৷ আদালতের নির্দেশ মেনে কেন তিন মাসের মধ্যে যোগ্য বিবেচিত প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়নি ? প্রশ্ন করেন ৷ এরপরেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন বিচারপতি ৷