কলকাতা, 23 নভেম্বর: রাজ্যের শুধু শহর কলকাতাতেই প্রায় তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ কথা বলেন সাঁওতালি ভাষায় (Santali language) । শুধু তাই নয়, তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে তৎপর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার (State Government)। এই ধরনের একাধিক কারণ বশতই আজ থেকে দু'বছর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) কর্তৃপক্ষ সাঁওতালি বিভাগ চালু করার বিষয়ে উৎসাহিত হয় ।
বিশ্ববিদ্যালয়য়ের পক্ষ থেকে 2020 সালে সাঁওতালি এবং নেপালি বিভাগ (Santali and Nepali Department) শুরু করার আর্জি জানিয়ে রাজ্য শিক্ষা দফতরকে (State education department) চিঠি পাঠানো হয় । তবে আজ প্রায় তিন বছর হতে চললো এখনও সেই চিঠির উত্তরের অপেক্ষায় উৎসাহী অধ্যাপকরা । 2020 সালে ডিন অফ আর্টসের তত্ত্বাবধানে পাঁচ জন অধ্যাপক মিলে প্রাথমিক একটি রিপোর্ট তৈরি করে চিঠি-সহ তা রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠান ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বা ওশানোগ্রাফি (Oceanography) বিভাগের অধ্যাপিকা রাহি সরেন বলেন, "কলকাতায় প্রায় তিন লক্ষ মানুষ সাঁওতালি ভাষায় কথা বলেন । রাজ্যে এই সংখ্যাটা আরও বেশি । বাংলা ভাষার পরেই এর স্থান । তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি বিভাগ হওয়া উচিত বলে আমাদের মনে হয় । ইতিমধ্যেই স্কুল স্তরে এই ভাষার মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে । তাই এবার বিশ্ববদ্যালয় স্তরেও শুরু হওয়া দরকার ।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠালেও আজ প্রায় তিন বছর হতে চললো এখনও কোনও উত্তর পাইনি । এরপর বিষয়টি কোন পর্যায় আটকে রয়েছে জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সুরঞ্জন দাস (Suranjan Das) আবারও চিঠি পাঠিয়েছিলেন । কিন্তু সেই চিঠিরও কোনও উত্তর আসেনি।"
এই বিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "একাধিক ভাষায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ থাকলেও সাঁওতালি ভাষায় রাজ্যে হাতেগোনা কয়েকটি ইউনিভার্সিটিতে উচ্চশিক্ষা লাভ করার সুযোগ রয়েছে । তাই ঐকতি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট বলে অনেকেরই ইচ্ছে থাকলেও ভাষাটা আর পরে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না । অন্যদিকে কলকাতায় কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষায় পড়ানো হয় না। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি নিয়ে উৎসাহী হয় । আমাদের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানো হলেও উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে আর কিছুই জানানো হয়নি । উপাচার্য চিঠি লিখে বিষয়টি জানতেও চান । তবে তাতেও কোনও উত্তর আসেনি । তাই আবারও আমরা উপাচার্যর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব যাতে দ্রুত জেইউ-তে এই দুটি বিভাগ চালু করা যায় ।"
আরও পড়ুন: যাদবপুরের ভাঁড়ার শূন্য ! অনুদান চেয়ে সোশাল মিডিয়ায় খোলা চিঠি উপাচার্যের
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান ও পুরুলিয়ার সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় সাঁওতালি বিভাগ রয়েছে। গত কয়েক বছরে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেশের আঞ্চলিক ভাষা ও সাঁওতালি ভাষায় পঠনপাঠন এবং বিকাশের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে । ঠিক একইভাবে সেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও তৈরি করা হয় সাঁওতালিতে ।