ETV Bharat / state

Joshimath Crisis: জোশীমঠের বিপর্যয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ রাজ্যের পর্বতারোহীদের

পর্বতারোহীদের জন্য জোশীমঠ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ৷ এখানের বাজার থেকে কম খরচে জিনিসপত্র পাওয়া যায় ৷ যা পর্বতারাহণের জন্য প্রয়োজনীয় ৷ কিন্তু জোশীমঠের বিপর্যয়ের ফলে বাড়বে হোটেল থেকে জিনিসের দাম ৷ পর্বতারাহণে যেতে অসুবিধা হবে বলে চিন্তায় পড়েছেন পাহাড়প্রেমীরা (Joshimath Crisis) ৷

Joshimath Crisis
Joshimath Crisis
author img

By

Published : Jan 12, 2023, 10:05 PM IST

কলকাতা, 12 জানুয়ারি: উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে মাটি ধসে একের পর এক বাড়িতে ধরছে ফাটল । তাই যেসব বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলিকে ভেঙে ফেলার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ড সরকার একাধিক বাড়ি খালি করার নির্দেশ দিয়েছে । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে কাজ । জোশীমঠের বিপর্যয় চিন্তায় ফেলেছে এই রাজ্যের পর্বতারোহীদের (Joshimath incident creates problem for mountaineers ) ।

উত্তরাখণ্ডের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পাহাড় রয়েছে: এই গুলিতে নিয়মিত পর্বতারোহীরা ট্রেক করে থাকেন সেগুলি জোশীমঠ হয়ে যেতে হয় । তাই যতদিন ওখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হয় ততদিন আর জোশীমঠ থেকে ট্রেকিং শুরু করা সম্ভব নয় । ট্রেকিং ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট । মাউন্ট কামেট, চাঙাবাং কালাঙ্কা পিক, বাগিনি গ্লেসিয়ার, তপোবন কুয়ারি পাস বা মালারি টেট্রাক করতে গেলে জোশীমঠ দিয়েই যেতে হয় । এই পাহাড়গুলিতে ট্রেক করতে গেলে পর্বতারোহীরা সাধারণত জোশীমঠকেই বেশ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করেন ।

জোশীমঠ হয়ে যাওয়ার সুবিধা: ট্রেকিং শুরু করার আগে মূলত আরোহীরা জোশীমঠ শহর এবং বাজারে দু-একদিন কাটায় ৷ সেখান থেকে ট্রেকিংয়ের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও খাওয়ার দাওয়ার সংগ্রহ করে তবেই তাঁরা গন্তব্যের জন্য যাত্রা শুরু করেন । তাই এই দুটি জায়গাই ট্রেকারদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তবে বর্তমান পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে পর্বতারোহীরা তাদের ট্রেকিং বাতিল করেছেন বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় পরের বছর ওই দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন ।

পর্বতারোহীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ: পর্বতারোহনে অর্জুন পুরস্কার প্রাপ্ত দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, "এই বছর আমরা পরিকল্পনা ছিল জোশীমঠ হয়ে বাগিনী গ্লেসিয়ারের আগে দ্রোনাগিরি সামিট করব । কিন্তু সেই পরিকল্পনা আপাতত বাতিল করতে হল । জোশীমঠ আমার কাছে একটা নস্টালজিক জায়গা ৷ কারণ আমি আমার জীবনের প্রথম ট্র্যাকিং ওইখান থেকেই শুরু করেছিলাম । তবে বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এই বছর আর আদৌ হয়তো ওইদিকে যাওয়া যাবে না । ইতিমধ্যেই আমি ওদিকে যাবো পরিকল্পনা করে যাবতীয় প্রস্তুতিও শুরু করেছিলাম । স্বাভাবিকভাবেই এটা পর্বতারোহীদের কাছে একটা বিরাট ধাক্কা ।"

পাশাপাশি বর্ষীয়ান পর্বতারোহী বসন্ত সিনহা রায় বলেন, "জোশীমঠকে আমরা বেশ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করি । এক্সপিডিশন শুরু করার আগে পারমিট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা হয় এখন থেকেই । তাছাড়া এখানকার বাজার থেকে খাবার দাবারের সামগ্রী কিনে তারপর আমরা যাত্রা শুরু করি । তাই যদি জোশীমঠের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পর্বতারোহীদের সমস্যায় পড়তে হবে । তখন আবার বিকল্প রুট দিয়ে ট্রেকিং এর পরিকল্পনা করতে হবে । জোশী মঠ বেশ ক্যাম্প হিসেবে অনেক বেশি সুবিধাজনক এবং এখান থেকে পাহাড়ে ওঠার জন্য যা সামগ্রীর প্রয়োজন সবকিছুই খুব সহজেই পাওয়া যায় । তাই অন্যত্র এতটা সুবিধা হবে কি না কিংবা জিনিসপত্র সহজলভ্য হবে কি না, সেই বিষয়টিও দেখার ।"

বাড়বে পর্বতারাহনের খরচা: আরেক পর্বতারোহী শতরূপ সিদ্ধান্ত বলেন, "জোশীমঠে যে বিপর্যয় হয়ে গেল, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওখানকার স্থানীয় হোটেলগুলি । পর্বতারোহীদের ক্ষেত্রে সমস্যা তো বটেই এবং ওখানকার স্থানীয় বহু মানুষ ট্রাকিং ট্যুরিজমের উপরে নির্ভর করে জীবনযাপন করেন । তাঁদের ব্যবসা ধাক্কা খাবে । তাই ওই হোটেলগুলি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় ৷ আমাদেরও অনেকটা দূরে বেশি টাকা দিয়ে থাকতে হবে । এছাড়া অনেকটা কম দামে জোশীমঠ বাজার থেকে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা যেত ৷"

তিনি আরও বলেন, "তবে এখন অনেকটা দূর থেকে জিনিসপত্র আনতে হলে খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে । রেশন নিয়ে অনেক কম পয়সায় আগে পর্বতারোহীরা থাকতে পারত ৷ বাজার থেকে পাহাড়ে ওঠার আগে সব সামগ্রী কেনা হত ৷ সেই সবগুলো ভীষণভাবে ধাক্কা খাবে ৷ এবার যদি আমাদের কোন ঘুর পথে যেতে হয় ৷ অন্য কোনও জায়গার থেকে জিনিসপত্র কিনতে হয় ৷ তাহলে তার খরচ অনেক বেড়ে যাবে । আরও আগে থেকে ট্রেকিং শুরু করতে হবে ৷ জিনিসপত্র কুলি বা খচ্চরের পিঠে করে বয়ে নিয়ে যেতে হবে । এর ফলে মধ্যবিত্ত যারা ট্রেকিং করতে যাবেন তাদের পক্ষে অনেকটাই সমস্যা সৃষ্টি হবে ।"

আরও পড়ুন: জোশীমঠে ক্ষতিপূরণ রাজ্যের, পরিবার পিছু মিলবে 1.5 লক্ষ টাকা

কলকাতা, 12 জানুয়ারি: উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে মাটি ধসে একের পর এক বাড়িতে ধরছে ফাটল । তাই যেসব বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলিকে ভেঙে ফেলার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ড সরকার একাধিক বাড়ি খালি করার নির্দেশ দিয়েছে । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে কাজ । জোশীমঠের বিপর্যয় চিন্তায় ফেলেছে এই রাজ্যের পর্বতারোহীদের (Joshimath incident creates problem for mountaineers ) ।

উত্তরাখণ্ডের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পাহাড় রয়েছে: এই গুলিতে নিয়মিত পর্বতারোহীরা ট্রেক করে থাকেন সেগুলি জোশীমঠ হয়ে যেতে হয় । তাই যতদিন ওখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হয় ততদিন আর জোশীমঠ থেকে ট্রেকিং শুরু করা সম্ভব নয় । ট্রেকিং ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট । মাউন্ট কামেট, চাঙাবাং কালাঙ্কা পিক, বাগিনি গ্লেসিয়ার, তপোবন কুয়ারি পাস বা মালারি টেট্রাক করতে গেলে জোশীমঠ দিয়েই যেতে হয় । এই পাহাড়গুলিতে ট্রেক করতে গেলে পর্বতারোহীরা সাধারণত জোশীমঠকেই বেশ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করেন ।

জোশীমঠ হয়ে যাওয়ার সুবিধা: ট্রেকিং শুরু করার আগে মূলত আরোহীরা জোশীমঠ শহর এবং বাজারে দু-একদিন কাটায় ৷ সেখান থেকে ট্রেকিংয়ের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও খাওয়ার দাওয়ার সংগ্রহ করে তবেই তাঁরা গন্তব্যের জন্য যাত্রা শুরু করেন । তাই এই দুটি জায়গাই ট্রেকারদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তবে বর্তমান পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে পর্বতারোহীরা তাদের ট্রেকিং বাতিল করেছেন বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় পরের বছর ওই দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন ।

পর্বতারোহীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ: পর্বতারোহনে অর্জুন পুরস্কার প্রাপ্ত দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, "এই বছর আমরা পরিকল্পনা ছিল জোশীমঠ হয়ে বাগিনী গ্লেসিয়ারের আগে দ্রোনাগিরি সামিট করব । কিন্তু সেই পরিকল্পনা আপাতত বাতিল করতে হল । জোশীমঠ আমার কাছে একটা নস্টালজিক জায়গা ৷ কারণ আমি আমার জীবনের প্রথম ট্র্যাকিং ওইখান থেকেই শুরু করেছিলাম । তবে বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এই বছর আর আদৌ হয়তো ওইদিকে যাওয়া যাবে না । ইতিমধ্যেই আমি ওদিকে যাবো পরিকল্পনা করে যাবতীয় প্রস্তুতিও শুরু করেছিলাম । স্বাভাবিকভাবেই এটা পর্বতারোহীদের কাছে একটা বিরাট ধাক্কা ।"

পাশাপাশি বর্ষীয়ান পর্বতারোহী বসন্ত সিনহা রায় বলেন, "জোশীমঠকে আমরা বেশ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করি । এক্সপিডিশন শুরু করার আগে পারমিট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা হয় এখন থেকেই । তাছাড়া এখানকার বাজার থেকে খাবার দাবারের সামগ্রী কিনে তারপর আমরা যাত্রা শুরু করি । তাই যদি জোশীমঠের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পর্বতারোহীদের সমস্যায় পড়তে হবে । তখন আবার বিকল্প রুট দিয়ে ট্রেকিং এর পরিকল্পনা করতে হবে । জোশী মঠ বেশ ক্যাম্প হিসেবে অনেক বেশি সুবিধাজনক এবং এখান থেকে পাহাড়ে ওঠার জন্য যা সামগ্রীর প্রয়োজন সবকিছুই খুব সহজেই পাওয়া যায় । তাই অন্যত্র এতটা সুবিধা হবে কি না কিংবা জিনিসপত্র সহজলভ্য হবে কি না, সেই বিষয়টিও দেখার ।"

বাড়বে পর্বতারাহনের খরচা: আরেক পর্বতারোহী শতরূপ সিদ্ধান্ত বলেন, "জোশীমঠে যে বিপর্যয় হয়ে গেল, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওখানকার স্থানীয় হোটেলগুলি । পর্বতারোহীদের ক্ষেত্রে সমস্যা তো বটেই এবং ওখানকার স্থানীয় বহু মানুষ ট্রাকিং ট্যুরিজমের উপরে নির্ভর করে জীবনযাপন করেন । তাঁদের ব্যবসা ধাক্কা খাবে । তাই ওই হোটেলগুলি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় ৷ আমাদেরও অনেকটা দূরে বেশি টাকা দিয়ে থাকতে হবে । এছাড়া অনেকটা কম দামে জোশীমঠ বাজার থেকে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা যেত ৷"

তিনি আরও বলেন, "তবে এখন অনেকটা দূর থেকে জিনিসপত্র আনতে হলে খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে । রেশন নিয়ে অনেক কম পয়সায় আগে পর্বতারোহীরা থাকতে পারত ৷ বাজার থেকে পাহাড়ে ওঠার আগে সব সামগ্রী কেনা হত ৷ সেই সবগুলো ভীষণভাবে ধাক্কা খাবে ৷ এবার যদি আমাদের কোন ঘুর পথে যেতে হয় ৷ অন্য কোনও জায়গার থেকে জিনিসপত্র কিনতে হয় ৷ তাহলে তার খরচ অনেক বেড়ে যাবে । আরও আগে থেকে ট্রেকিং শুরু করতে হবে ৷ জিনিসপত্র কুলি বা খচ্চরের পিঠে করে বয়ে নিয়ে যেতে হবে । এর ফলে মধ্যবিত্ত যারা ট্রেকিং করতে যাবেন তাদের পক্ষে অনেকটাই সমস্যা সৃষ্টি হবে ।"

আরও পড়ুন: জোশীমঠে ক্ষতিপূরণ রাজ্যের, পরিবার পিছু মিলবে 1.5 লক্ষ টাকা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.