কলকাতা, 23 ডিসেম্বর: আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তুললেন চাকরিপ্রার্থীরা। অভিযোগ প্রায় 27 লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং তাঁর অ্যাসিস্টেন্টের বিরুদ্ধে । শনিবার 2016 সালের কর্মশিক্ষা ও শরীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা বৈঠক করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে। দুপুর সাড়ে তিনটে থেকে শুরু হয় বৈঠক। চাকরিপ্রার্থীদের তরফ থেকে 16 জন এই বৈঠকে যোগ দেন। প্রায় আধঘন্টা মতো বৈঠক চলে দু'পক্ষের মধ্যে। এরপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন চাকরিপ্রার্থীরা।
সুপারিশ হয়ে গেলেও নিয়োগপত্র মেলেনি, এই অভিযোগ নিয়েই মাতঙ্গিনী হাজরার পাদদেশে অবস্থানে রয়েছেন কর্মশিক্ষা ও শরীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, সব হয়ে গেলেও তাঁদের নিয়োগ পত্র এখনও হাতে আসেনি। বরং অপর দিকে একটি মামলা হয়েছে যার ফলে তাঁদের নিয়োগ কাটছে রয়েছে। আর সেই মামলা লড়ছেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। যিনি কি না, একসময় এই চাকরিপ্রার্থীদের হয়েছে 142 জনের থেকে মোট 27 লক্ষ টাকা নেন বলে অভিযোগ। এক চাকরিপ্রার্থী দীপঙ্কর জানা জানান, আমরা ইতিমধ্যেই 27 লক্ষ টাকা জোগার করে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের অ্যাসিস্টেন্ট দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়কে দিয়েছি।
তিনি বলেন, "আমরা কয়েকদিন আগে যখন সমস্যা নিয়ে বিকাশরঞ্জনবাবুর বাড়ি গিয়েছিলাম ৷ উনি বলেছিলেন, এই সরকার আর রাখার দরকার নাই। আমরা ক্ষমতায় এলেই সব হয়ে যাবে সাতদিনে। যদি এরা দিতে পারেন তাহলে সরকার কেন নয় ?" চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন তাঁদের নিয়ে যে রাজনীতি হচ্ছে, তা বন্ধ করা হোক। এরপরে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বসে কুণাল ঘোষ বলেন, "আমি যখন গিয়েছিলাম ওদের মঞ্চে তখন মুখ্যমন্ত্রীকে আমি বলি। পরের দিনেই ওই ধর্নামঞ্চে দু'জন অফিসার যান। তারপরেই পোস্ট তৈরি করে সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়।" তার সঙ্গেই তিনি বলেন, "গরিবদের জন্য কাজ করছেন এদিকে এত টাকা নিচ্ছেন। উনি নাকি গরিবের নেতা ! সস্তার রাজনীতি হচ্ছে ! এটা অনৈতিক।"
তবে কুণাল ঘোষ ও চাকরিপ্রার্থীদের এই অভিযোগের পর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "যারা একথা বলছেন তাঁরা তাঁদের কি অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলছেন তারাই বলতে পারবেন।" যারা এই ধরনের কথা বলছেন তারা কিসের ভিত্তিতে কোন অভিজ্ঞতা কথা বলছেন তা বলতে পারব না। অসত্য কথা বলা হচ্ছে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে আক্রমণ করে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, "আমি বা আমার সহকর্মীরা লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন তাতে যদি কুণালবাবুর পোষা হয়ে থাকে তাহলে উনি ওনার দিদিকে বলুন না যে বেআইনি চাকরিগুলো হয়েছে সেগুলো বাতিল করে দেওয়া হবে।"
তিনি আরও বলেন, "নবান্ন থেকে আজই বা কালকেই বলে দিতে বলুন টাকার বিনিময়ে যে চাকরিগুলো হয়েছে তাদের চাকরি কাল থেকে বাতিল করে দেওয়া হবে। পরিবর্তে যারা যোগ্য রয়েছে তারাই চাকরি পাবে। এই বিষয়টা মীমাংসা করতে তো এক ঘন্টাও সময় লাগে না। কুণালবাবুরা এই সমস্ত অসহায় ছেলেমেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। তাদের থেকে আবারও টাকা তোলার চেষ্টা করছেন। কুণালবাবুকে বলছি চ্যালেঞ্জ নিন। আপনার দিদিকে বলুন এক ঘন্টার মধ্যে সমস্ত বেআইনি চাকরি বাতিল করে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগ দিক।"
আরও পড়ুন