কলকাতা, 17 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে রাজ্যে চলছে বিক্ষোভ । তবে তার মধ্যে মুর্শিদাবাদে প্রভাব পড়েছে বেশি । পোড়ানো হয়েছে ট্রেন, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু দোকান, লুটপাট চালানো হয়েছে কয়েকটি জায়গায়, ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি । আর এই পরিস্থিতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জঙ্গি সংগঠনগুলি । গোয়েন্দা সূত্রে খবর মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করছে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া । এ প্রসঙ্গে কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন," মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসা হয়ে উঠেছে জঙ্গিদের আখড়া । তারা যুবকদের মগজ ধোলাই করছে । এমনকি এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকেও ।"
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরই মুর্শিদাবাদে জামাত যোগের কথা প্রথম সামনে আসে । জানা গেছে ,মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়েই প্রবেশ করছে জঙ্গিরা । হোলি আর্টিজ়ন মামলায় সদ্য ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ লালগোলা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছিল । তৈরি করেছিল জঙ্গি সংগঠন । একটু একটু করে দখল নিয়েছিল মোকিমনগর মাদ্রাসা । এছাড়া পোশাকের দোকানের আড়ালে চলত বোমা সরবরাহ । সেখানেও যাতায়াত ছিল নাসিরুল্লাহের । এমনকি মুর্শিদাবাদের উমরপুরে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল সে । পরে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে একের পর এক জঙ্গিকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় । তাদের কাছ থকে উদ্ধার হয় 50 কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক , প্রচুর IID ও জিলেটিন স্টিক ।
গোয়েন্দাদের ধারণা, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে । এমনিতেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন এই আইনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন । আর এই সুযোগে সংগঠন বাড়িয়ে নিচ্ছে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া । বিষয়টিকে সংখ্যালঘু বিরোধী আখ্যা দিয়ে চালানো হচ্ছে মগজ ধোলাই । এপ্রসঙ্গে ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের প্রাক্তন IG পঙ্কজ দত্ত বলেন, “ ভারতবর্ষের সার্বভৌমত্বের সব থেকে বড় আতঙ্কের নাম জামাত । তাঁরা বাংলাদেশ থেকে এদিকে আসছে । এখানে সংগঠন তৈরি করছে । বাংলায় কথা বলছে । বাড়ি ভাড়া নিচ্ছে । বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে ইন্টেলিজেন্সের কাছে সব খবর আছে । তারা কেমনভাবে কাজ করছে সেটা প্রকাশ করা হবে না। কিন্তু তারা সমস্ত বিষয়টি জানে । ইন্টেলিজেন্স সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে ।"
লালবাজারের এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, “ এই অবস্থার সুযোগ যে জঙ্গিরা নেবে, তা বলা বাহুল্য । তবে নাশকতা ঘটাবে কিনা সেটা বলা যায় না । বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে তারা সংগঠন বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে । ফলে তৈরি হবে নতুন নতুন জঙ্গি । আর সেটাই সবথেকে বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে গোয়েন্দাদের কাছে ।"