কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর: সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বিএসপি সাংসদ কুনওয়ার দানিশ আলিকে জাত-ধর্ম তুলে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরী। যা নিয়ে দেশজুড়ে হইচই হয়েছে প্রবল। জামাত-ই-ইসলামী হিন্দও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। জামাতের সদর দফতর দিল্লি থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরী গণতন্ত্রের পীঠস্থান লোকসভায় দাঁড়িয়ে যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন, তা চরম আপত্তিজনক ও অবমাননাকর। এমন নোংরা ভাষায় একজন নির্বাচিত সাংসদকে আক্রমণ করা যায় না। এটা রাজনৈতিক সৌজন্য ও সংসদীয় শিষ্টাচারের পরিপন্থী বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
জামাতের সর্বভারতীয় মিডিয়া সেক্রেটারি কেকে সুহাইল বলেন, "বিএসপি সাংসদ দানিশ আলিকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরী, তা ভয়ঙ্কর ও অবমাননাকর ৷ সংসদ ও গণতন্ত্রেরও মর্যাদা হানিকরের সমান তা। একজন সাংসদকে সংসদের অধিবেশন চলাকালীন যেভাবে সন্ত্রাসী, দালাল ইত্যাদি বলে জাত-ধর্ম তুলিয়ে অশালীন ও সাম্প্রদায়িক ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে তাতে সারা বিশ্বের কাছে ভারতের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। সাংসদ দানিশ আলির ধর্মীয় পরিচয় টেনে সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়কে নিশানা করে একের পর এক বিস্ফোরক বাক্য প্রয়োগ এটাই প্রমাণ করে, গোটা দেশে মুসলিম-বিদ্বেষ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে ! পুরো বিষয়টিকে জামাত বলেছে, এই ধরনের নোংরা ভাষা কেবল অবমাননাকর কিংবা আক্রমণাত্মকই নয়; বরং এ ধরনের কুরুচিকর ভাষা প্রয়োগ করে ফৌজদারি অপরাধ করেছে বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরী।"
এই ঘটনার চারদিন দিন কেটে গেলেও প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেননি, ক্ষমা চাননি বা অভিযুক্ত সাংসদকে ভর্ৎসনাও পর্যন্ত করা হয়নি। অবশ্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা রেকর্ড থেকে ওই বিতর্কিত কথাগুলো কেবল বাদ দিয়ে কীর্তিমান বিজেপি সাংসদকে সাবধান করেছেন ৷ ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও জানান লোকসভার অধ্যক্ষ ৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মৌখিকভাবে লোকসভায় দুঃখ প্রকাশ করে দায় সেরেছেন। জামিয়তে মনে করে, নতুন সংসদ ভবন শুরুতেই চরম 'হেট-স্পিচ'-এর সাক্ষী হল ৷ অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ পার্লামেন্টের মর্যাদাকে ধূলায় মিশিয়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে কালিমালিপ্ত করেছে বলেও মনে করে তারা।
আরও পড়ুন: জম্মু লিথিয়াম ভাণ্ডার পুঁজিবাদীদের হাতে তুলে দেবে বিজেপি, উদ্বিগ্ন মেহবুবা
সরকার কিংবা প্রধানমন্ত্রী এমন সাংঘাতিক বিদ্বেষী ঘটনার পরেও মুখে কুলুপ এঁটে থাকলে এভাবেই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে কটূক্তিকর, উগ্র জাতীয়তাবাদী ও চরম অপমানজনক মন্তব্যের ঝড় বইবে নতুন পার্লামেন্টে। সাংসদ রমেশ বিধুরীর বক্তব্যকে অপরাধ ও সমাজবিরোধীদের ভাষা বলে অভিযোগ করে জামাত-ই-ইসলামী হিন্দ দাবি করেছে, অবিলম্বে তার সাংসদ পদ বাতিল করা হোক এবং বিজেপি দল থেকেও তাকে বরখাস্ত করুক ।