কলকাতা, 23 ডিসেম্বর: অপসারণ প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ ৷ রাত পোহালেই সমাবর্তন ৷ আর তার কয়েক ঘণ্টা আগেই উপাচার্য পদ থেকে বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ আর তারপরই মুখ খুললেন তিনি ৷
শনিবার বুদ্ধদেব সাউ বলেন, "আড়াই হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের জন্য লড়েছি। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের ডিগ্রি দেওয়া হয়। বহু ছাত্র-ছাত্রী এখন চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। তাঁদের কাছে এই ডিগ্রি খুব প্রয়োজনীয়। আমি আড়াই হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলতে পারব না। এর জন্য যদি আমায় জেলে যেতে হয় আমি তাও রাজি ৷" যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার সময় আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজে বুদ্ধদেব সাউকে নিয়োগ করেছিলেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে। পরবর্তীকালে সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয় দু'পক্ষের মধ্যে। অবশেষে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগের রাতে অপসারণ করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে। ফলে অনিশ্চয়তায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের 2023 সালের সমাবর্তন অনুষ্ঠান।

সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপলক্ষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইউজিসি চেয়ারম্যান, উচ্চশিক্ষা দফতরের চেয়ারম্যান তথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং আচার্যকে। সেই উপলক্ষে শনিবার রাতেই কলকাতায় পৌঁছন ইউজিসির চেয়ারম্যান। বিমানবন্দরে তাঁকে আনতে যাওয়ার সময়ই নিজের অপসারণের কথা জানতে পারেন বুদ্ধদেব সাউ। যদিও তাঁর কথায় এখনও পর্যন্ত তিনি চিঠি হাতে পাননি। তবে রাত পেরোলেই যেখানে সমাবর্তন অনুষ্ঠান তার আগে এই ধরনের চিঠি বেশ সমস্যা তৈরি করেছে। কারণ সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। রাজভবন সূত্রে খবর যেহেতু এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজভবনের কোনও অনুমতি ছিল না, তাই এই অর্থ অন্তর্বর্তী উপাচার্যের বেতন থেকে কেটে নেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। তৈরি করা হয়েছে তদন্ত কমিটিও। এই বিষয়ে বুদ্ধদেব সাউ বলেন, "সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা বহুদিন ধরে চলছে। উনি তো বাধা দেননি। আমন্ত্রণপত্রে যাদের নাম রাখতে বলা হয়েছিল পরপর তাই করা হয়েছে। কে দুর্নীতি করেছে তা বোঝা যাবে। আমি চাই তদন্ত হোক।"
তবে যে আচার্যই অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করেছিলেন আজ তারই এই পদক্ষেপ নিয়ে কি ভাবছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ ? তিনি বলেন, "ওনার কোথায় রাগ হয়েছে আমি জানি না। আমার আজ শান্তি লাগছে। ছাত্রদের ভবিষ্যতটাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখতে আমার খুব খারাপ লাগছিল সেই দায় আমার থেকে চলে গেল। আমি ছাত্রদের ভালোবাসি। আড়াই হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যতটাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখতে আমি পারব না।"
আরও পড়ুন