কলকাতা, 8মে : কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ে হঠাৎই চুপচাপ হয়ে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রায় এক সপ্তাহ যাবত সামনে আসছেন না তিনি । যা নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে জোর জল্পনা । প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শেই কি অবস্থান বদলালেন মমতা ? উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন । রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, কোরোনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি ফেরাতে আসরে নেমেছেন প্রশান্ত কিশোর । এর ফলে মুখ্যমন্ত্রী অন্তরালে থেকেই কোরোনা মোকাবিলার কাজ চালাচ্ছেন ।
কিছুদিন আগেও রাজ্যের লকডাউন পরিস্থিতি এবং কোরোনা সম্পর্কিত আপডেট দিতে দেখা যেত মুখ্যমন্ত্রীকে । এমনকী বারবার হাসপাতাল, রেশন দোকানসহ অন্যত্র সারপ্রাইজ ভিজ়িট করেছেন তিনি । পথে নেমে লকডাউন নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিয়েছেন । বারবার মানুষের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন । কোরোনা মোকাবিলা নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর গতিবিধি ছিল অব্যাহত । কিন্তু গত সাত দিন তাঁর সেই কাজে যেন ছন্দপতন । সামনের সারিতে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে । এদিকে আবার কিছুদিন আগেই দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেছেন রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোর । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে তাঁর । কোরোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর তথ্য গোপন, যথোপযুক্ত টেস্ট না করা নিয়ে বিরোধীদের লাগাতার অভিযোগের ফলে রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তি কিছুটা নষ্ট হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । এই ভাবমূর্তিকে ফেরাতে প্রশান্ত কিশোর হাল ধরেছেন বলে মনে করছেন একাংশ ।
রাজনৈতিক মহলের ধারণার সঙ্গে মিলছে মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক পদক্ষেপ । কেন্দ্রীয় সরকার তৃতীয় দফার লকডাউন জারি করার আগে দোকান খোলা বা বন্ধ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছিল । মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের তরফে পৃথক গাইডলাইন প্রকাশ করা হবে। সেই মতো, গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর বদলে গাইডলাইন প্রকাশ করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা ।
কোরোনা নিয়ে কোনও প্রকাশ্য বিবৃতি দিতে কিংবা পথে নামতে দেখা যাচ্ছে না মুখ্যমন্ত্রীকে । যা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা । যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাসক দলের এক নেতা মমতাকে নিয়ে ওঠা জল্পনাকে নস্যাৎ করেছেন । এপ্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "কোরোনার সঙ্গে লড়াইয়ে বাংলার মুখ হলেন মমতা । যখন প্রয়োজন তখন ঠিকই তিনি সামনেই থাকবেন । বাংলার মানুষ যাতে ভালো থাকেন সেই ব্যবস্থা করে চলেছেন তিনি ।"