কলকাতা, 1 মার্চ: একটি, দু'টি, তিনটি বা চারটি নয় ৷ সবমিলিয়ে কোম্পানির সংখ্যা 104 ! না, কোনও নামজাদা শিল্পপতির মালিকানাধীন সংস্থার তালিকার বিবরণ নয় ৷ তথ্য বলছে, এই 104টি সংস্থার মালিক, বা বলা ভালো মালকিন হলেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে (Bengal Recruitment Scam) জড়িয়ে পড়া অখ্য়াত অভিনেত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায় (Haimanti Ganguly has 104 Companies in 11 States) ! তদন্ত যতদূর গড়িয়েছে, তা থেকে ইডি-সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, হৈমন্তীর এই 104টি সংস্থা ছড়িয়ে রয়েছে ভারতের মোট 11টি রাজ্যে ৷ ইতিমধ্যেই সংস্থাগুলির নাম ও ঠিকানা হাতে পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ৷ এবার সেগুলির হাল-হকিকত জানতে উঠে পড়ে লেগেছে ইডি (Enforcement Directorate) ৷ তথ্যতালাশ শুরু করেছে সিবিআইও ৷
হৈমন্তীর এই 104টি সংস্থা সম্পর্কে যা কিছু জানা গিয়েছে, তা হল, সবমিলিয়ে এই সংস্থাগুলিতে অন্তত 30 কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ৷ তবে, এই বিনিয়োগ একবারে হয়নি ৷ বরং তা করা হয়েছে দফায় দফায় ৷ এই 104টি সংস্থার অধিকাংশেরই ঠিকানা রয়েছে এই রাজ্যে, অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে ৷ বাদবাকি কয়েকটি সংস্থা অন্যান্য রাজ্যে গড়ে তোলা হয়েছে ৷ ইডি জানতে চাইছে, এই 104টি সংস্থার ডিরেক্টর পদে কারা রয়েছেন ? এই সংস্থাগুলিতে মূলত কী ধরনের কাজ হয় ? সংস্থারগুলির বার্ষিক রোজগার কত ? এই সংস্থাগুলিতে কারা চাকরি করেন ? আর সবথেকে বড় প্রশ্ন হল, বিনিয়োগের টাকার উৎস কী ?
আরও পড়ুন: অবশেষে খোঁজ মিলল রহস্যময়ী হৈমন্তীর, বাপের বাড়ি হাওড়ার বাঁকসাড়ায়
বিভিন্ন রাজ্যের বণিকসভাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, ওডিশা এবং হিমচলপ্রদেশে হৈমন্তীর মালিকানাধীন সংস্থা রয়েছে ৷ সংশ্লিষ্ট মহলের অনুমান, শীঘ্রই এই সংস্থাগুলির ঠিকানায় অভিযান চালাবেন ইডি ও সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা ৷
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম কুন্তল ঘোষের মুখে হৈমন্তী চক্রবর্তীর নাম শোনা যায় ৷ তিনি দাবি করেন, হৈমন্তী আদতে গোপাল দলপতির স্ত্রী ৷ যদিও পরবর্তীতে গোপাল দলপতি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, হৈমন্তী তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী ৷ এবং হেমন্তীকে 'ভালো মেয়ে' বলে দরাজ সার্টিফিকেটও দেন তিনি ৷ যদিও নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে ধৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষের দাবি, এই ঘটনায় টাকার লেনদেন-সহ অন্য সব তথ্যই হৈমন্তীর কাছে রয়েছে ! যা একবাক্যে খারিজ করে দিয়েছেন গোপাল দলপতি ৷ অন্যদিকে, হৈমন্তীর মা প্রথমে সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, 'মেয়ে মরে গিয়েছে' ! পরে সেই তিনিই দাবি করেন, তাঁর মেয়ে 'কোনও অন্য়ায় করতে পারে না' ! তবে এসবের মধ্যে এখনও অন্তরালেই রয়েছেন হৈমন্তী ৷ তাঁর স্বামী (বর্তমান অথবা প্রাক্তন) গোপাল দলপতি অবশ্য দিল্লিতে বেশ কয়েকবার টেলিভিশন ক্য়ামেরার সামনে ধরা দিয়েছেন ৷ ফলাও করে দিয়েছেন সাক্ষাৎকার ৷