কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর : বেআইনি মাদকের ব্যবসা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও পুলিশ এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মাথাদের ধরার ব্যাপারে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছে না । মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের । এই সংক্রান্ত একটি মামলায় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মন্তব্য করা হয় ।
মাদক পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে জামিন মঞ্জুর করার পর হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, "এই সংক্রান্ত মামলাগুলি এমনভাবে তদন্তকারী সংস্থা আদালতের কাছে পেশ করে যে অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া ছাড়া আদালতের কিছুই করার থাকে না । আসলে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত মূল পান্ডাদের ব্যাপারে কোন তথ্যই তদন্ত সংস্থা প্রকাশ করতে চায় না ।"
হিতেন রায় ওরফে হিরু নামে এক ব্যক্তিকে চলতি বছরের 11 জানুয়ারি গ্রেপ্তার করে দিনহাটা পুলিশ । তার বিরুদ্ধে বেআইনি অস্ত্র পাচার ও মাদক পাচারের অভিযোগ দায়ের করা হয় । কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সেই অর্থে পুলিশ গুরুতর কোন তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি । এই ব্যাপারে ক্ষোভ ব্যক্ত করে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বেশিরভাগ সময় দেখা যায় পুলিশ এদের গ্রেপ্তার করে অন্য একজন কোন ক্ষুদ্র মাদক পাচারকারীর কথা শোনে । যে বড় মাথারা এই সমস্ত ছোটো পাচারকারীদের রাস্তায় নামিয়ে কাজে লাগায়, তাদের নাম এরা স্বীকার করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তথ্য প্রমাণের দরকার হয় । কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তদন্তকারী সংস্থা এদের তথ্য বাইরে নিয়ে আসে না।"
"অভিযুক্ত হিতেন রায়ের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি । হয়ত ইনি একজন বড় পান্ডা । কিন্তু আদালতের কিছু করার নেই । তদন্তকারী সংস্থা যদি না এগিয়ে আসে তাহলে বড় মাথারা এইভাবে ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাবে।" মন্তব্য বিচারপতির ।
রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের DG-কে এই নির্দেশের কপি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ । হিতেন রায়কে 50,000 টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করে আদালত । পাশাপাশি অভিযুক্ত হিতেন রায় নিম্ন আদালতের অনুমতি ছাড়া আপাতত কোচবিহার জেলার বাইরে যেতে পারবে না । মামলার তদন্তে হিতেন রায়কে পুলিশের সঙ্গে সবরকমের সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।