ETV Bharat / state

বেনারসী নয়, জার্সিতে অনন্যা অরুন্ধতী - ক্রীড়াবিদ

ক্লাব এবং রাজ্য স্তরে চুটিয়ে ফুটবল খেলা অরুন্ধতী সেপাক টাকরো খেলেছেন দাপিয়ে । 1997 সালে সিনিয়র ন্যাশনালে রাজ্যকে সোনার পদক এনে দেওয়া অরুন্ধতী ফিটনেস বজায় রাখার কারণেই সেপাক টাকরো খেলাটি শুরু করেছিলেন । যা ছিল প্রথমে ফিটনেস রক্ষার অঙ্গ সেটাতেই চলে এসেছিল নৈপুণ্য । ফলে ফুটবল ছেড়ে সেপাক টাকরোতে চলে আসেন তিনি।

ক্রীড়াবিদ অরুন্ধতী দে
ক্রীড়াবিদ অরুন্ধতী দে
author img

By

Published : Mar 8, 2021, 3:30 PM IST

Updated : Mar 8, 2021, 6:03 PM IST

কলকাতা, 8 মার্চ : জীবনের জলসাঘরে দ্বৈত ভূমিকা পালন করে চলা মানুষের অভাব নেই । যদি এক নারী হাতে শাসনের তরবারি নিয়ে আমার আপনার বিপদে পাশে দাঁড়ান তাহলে তাঁর প্রয়াসকে কুর্নিশ করতেই হয় । আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এমনই এক স্ত্রী চরিত্রের সন্ধানে আমরা । অরুন্ধতী দে । পেশায় কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার । নেশায় ফুটবল কোচ এবং সেপাক টাকরোর আন্তর্জাতিক রেফারি ।

শহরের নানান বিশৃঙ্খলা রক্ষার নজরদার হিসেবে লালবাজার রয়েছে । নানারকম দুর্নীতির ঘাত প্রতিঘাত এড়িয়ে শহরকে বাসযোগ্য করার প্রাতিষ্ঠানিক দায় এই লাল বাড়ির উপর । তবে পুলিশ মানেই শহরের অন্ধকার দিক নিয়ে নাড়াচাড়া নয় । রোজনামচার উলটো পিঠে সমাজসেবার ছবিও রয়েছে । যেখানে আছে আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো । অসহায় বয়স্ক মানুষের দেখভাল করা । আবার ফুটবলের হাত ধরে সমাজের বখে যাওয়া ছেলে মেয়েদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার দায় । এমনই অনেকগুলো সমাজ সচেতনতা প্রকল্প এর মাঝে অন্যতম 'দামিনী' । যেখানে ফুটবল খেলার মধ্যে দিয়ে বখে যাওয়া শিশুমনকে দিশা দেখানো হয় । এই প্রকল্পের সঠিক রূপায়নের দায়িত্ব অরুন্ধতী দে-র উপর ।

আরও পড়ুন: বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ

ক্লাব এবং রাজ্য স্তরে চুটিয়ে ফুটবল খেলা অরুন্ধতী সেপাক টাকরো খেলেছেন দাপিয়ে । 1997 সালে সিনিয়র ন্যাশনালে রাজ্যকে সোনার পদক এনে দেওয়া অরুন্ধতী ফিটনেস বজায় রাখার কারণেই সেপাক টাকরো খেলাটি শুরু করেছিলেন । যা ছিল প্রথমে ফিটনেস রক্ষার অঙ্গ সেটাতেই চলে এসেছিল নৈপুণ্য । ফলে ফুটবল ছেড়ে সেপাক টাকরোতে চলে আসেন তিনি।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ক্রীড়াবিদ অরুন্ধতী দে'কে ইটিভি ভারতের কুর্নিশ

"ফুটবল খেলা শুরু করেছিলাম। ক্লাব, রাজ্য দেশের হয়ে খেলেছি । তবে একইরকম বা তার থেকে বেশি সাফল্য পেয়েছি সেপাক টাকরোতে । 1999 সালে প্রথমবার এই খেলার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছি । দেশের হয়ে শুধু খেলা নয়, পদক জয়ের নজির রয়েছে । রেফারিং করছি এই খেলার । সেটাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ম্যাচে । চিনে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ম্যাচ পরিচালনা করেছি । ফুটবল কোচিংয়ে ডি লাইসেন্স করেছি । এখন কলকাতা পুলিশের দামিনী প্রজেক্টে কোচের দায়িত্ব সামলাই।" বলছিলেন অরুন্ধতী । প্রায় একই সঙ্গে যোগ করলেন, "শ'দেড়েক ক্ষুদে ফুটবল শিক্ষার্থী রয়েছে । সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের ফুটবল শিক্ষার ভার আমার উপরে ।"

তবে গত একবছরে মহামারির পরিবেশে ফুটবল মাঠ থেকে দূরে থাকতে হওয়ার সময় কাজের ধরন বদলেছে অরুন্ধতীদের । করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তাঁদের । অরুন্ধতীর ডিউটি ছিল রাজারহাটে ক্যান্সার হাসপাতালে । সেখানে বিদেশ থেকে আসা মানুষদের নজরদারি করার দায়িত্ব ছিল তাঁর । তিনি একজন ক্রীড়াবিদ হওয়ায় এই কঠিন পরিস্থিতিতেও পিছিয়ে আসার কথা ভাবেননি একবারও । এখন ফুটবল শেখানোর পাশাপাশি বিভিন্ন হাসপাতাল, পুলিশের হেড কোয়ার্টার, এমনকি ব্রিগেডের ডিউটি করছেন অরুন্ধতীরা ।

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক নারী দিবস: মণিপুরের ভূমিকন্যার 'ম্যাগনিফিশিয়েন্ট মেরি' হওয়ার গল্প

ব্যক্তিগত জীবনে ঘুরতে যাওয়া অরুন্ধতীর নেশা । ফুটবলের প্রতি ভালবাসা অটুট রাখতে বিয়ে করেননি তিনি । এত সাফল্যের পরেও অরুন্ধতীর মতো ক্রীড়াবিদরা শুধুই গ্রিন পুলিশ । যা হতাশার। তবে আশা ছাড়েননি তিনি । পেছনে না তাকিয়ে সামনে মাথা উঁচু করে এগোনোর কথা বলছেন অরুন্ধতী দে । পুরাণ অনুসারে, বশিষ্ঠ মুনির স্ত্রীর নাম ছিল অরুন্ধতী । সেই সময়ের অন্যতম বিদুষী মহিলা হিসেবে খ্যাত ছিলেন । আজকের অরুন্ধতীদের লড়াই যেন তারই অনুসারী।

কলকাতা, 8 মার্চ : জীবনের জলসাঘরে দ্বৈত ভূমিকা পালন করে চলা মানুষের অভাব নেই । যদি এক নারী হাতে শাসনের তরবারি নিয়ে আমার আপনার বিপদে পাশে দাঁড়ান তাহলে তাঁর প্রয়াসকে কুর্নিশ করতেই হয় । আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এমনই এক স্ত্রী চরিত্রের সন্ধানে আমরা । অরুন্ধতী দে । পেশায় কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার । নেশায় ফুটবল কোচ এবং সেপাক টাকরোর আন্তর্জাতিক রেফারি ।

শহরের নানান বিশৃঙ্খলা রক্ষার নজরদার হিসেবে লালবাজার রয়েছে । নানারকম দুর্নীতির ঘাত প্রতিঘাত এড়িয়ে শহরকে বাসযোগ্য করার প্রাতিষ্ঠানিক দায় এই লাল বাড়ির উপর । তবে পুলিশ মানেই শহরের অন্ধকার দিক নিয়ে নাড়াচাড়া নয় । রোজনামচার উলটো পিঠে সমাজসেবার ছবিও রয়েছে । যেখানে আছে আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো । অসহায় বয়স্ক মানুষের দেখভাল করা । আবার ফুটবলের হাত ধরে সমাজের বখে যাওয়া ছেলে মেয়েদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার দায় । এমনই অনেকগুলো সমাজ সচেতনতা প্রকল্প এর মাঝে অন্যতম 'দামিনী' । যেখানে ফুটবল খেলার মধ্যে দিয়ে বখে যাওয়া শিশুমনকে দিশা দেখানো হয় । এই প্রকল্পের সঠিক রূপায়নের দায়িত্ব অরুন্ধতী দে-র উপর ।

আরও পড়ুন: বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ

ক্লাব এবং রাজ্য স্তরে চুটিয়ে ফুটবল খেলা অরুন্ধতী সেপাক টাকরো খেলেছেন দাপিয়ে । 1997 সালে সিনিয়র ন্যাশনালে রাজ্যকে সোনার পদক এনে দেওয়া অরুন্ধতী ফিটনেস বজায় রাখার কারণেই সেপাক টাকরো খেলাটি শুরু করেছিলেন । যা ছিল প্রথমে ফিটনেস রক্ষার অঙ্গ সেটাতেই চলে এসেছিল নৈপুণ্য । ফলে ফুটবল ছেড়ে সেপাক টাকরোতে চলে আসেন তিনি।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ক্রীড়াবিদ অরুন্ধতী দে'কে ইটিভি ভারতের কুর্নিশ

"ফুটবল খেলা শুরু করেছিলাম। ক্লাব, রাজ্য দেশের হয়ে খেলেছি । তবে একইরকম বা তার থেকে বেশি সাফল্য পেয়েছি সেপাক টাকরোতে । 1999 সালে প্রথমবার এই খেলার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছি । দেশের হয়ে শুধু খেলা নয়, পদক জয়ের নজির রয়েছে । রেফারিং করছি এই খেলার । সেটাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ম্যাচে । চিনে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ম্যাচ পরিচালনা করেছি । ফুটবল কোচিংয়ে ডি লাইসেন্স করেছি । এখন কলকাতা পুলিশের দামিনী প্রজেক্টে কোচের দায়িত্ব সামলাই।" বলছিলেন অরুন্ধতী । প্রায় একই সঙ্গে যোগ করলেন, "শ'দেড়েক ক্ষুদে ফুটবল শিক্ষার্থী রয়েছে । সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের ফুটবল শিক্ষার ভার আমার উপরে ।"

তবে গত একবছরে মহামারির পরিবেশে ফুটবল মাঠ থেকে দূরে থাকতে হওয়ার সময় কাজের ধরন বদলেছে অরুন্ধতীদের । করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তাঁদের । অরুন্ধতীর ডিউটি ছিল রাজারহাটে ক্যান্সার হাসপাতালে । সেখানে বিদেশ থেকে আসা মানুষদের নজরদারি করার দায়িত্ব ছিল তাঁর । তিনি একজন ক্রীড়াবিদ হওয়ায় এই কঠিন পরিস্থিতিতেও পিছিয়ে আসার কথা ভাবেননি একবারও । এখন ফুটবল শেখানোর পাশাপাশি বিভিন্ন হাসপাতাল, পুলিশের হেড কোয়ার্টার, এমনকি ব্রিগেডের ডিউটি করছেন অরুন্ধতীরা ।

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক নারী দিবস: মণিপুরের ভূমিকন্যার 'ম্যাগনিফিশিয়েন্ট মেরি' হওয়ার গল্প

ব্যক্তিগত জীবনে ঘুরতে যাওয়া অরুন্ধতীর নেশা । ফুটবলের প্রতি ভালবাসা অটুট রাখতে বিয়ে করেননি তিনি । এত সাফল্যের পরেও অরুন্ধতীর মতো ক্রীড়াবিদরা শুধুই গ্রিন পুলিশ । যা হতাশার। তবে আশা ছাড়েননি তিনি । পেছনে না তাকিয়ে সামনে মাথা উঁচু করে এগোনোর কথা বলছেন অরুন্ধতী দে । পুরাণ অনুসারে, বশিষ্ঠ মুনির স্ত্রীর নাম ছিল অরুন্ধতী । সেই সময়ের অন্যতম বিদুষী মহিলা হিসেবে খ্যাত ছিলেন । আজকের অরুন্ধতীদের লড়াই যেন তারই অনুসারী।

Last Updated : Mar 8, 2021, 6:03 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.