কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠক করলেন ইউজিসি'র চার প্রতিনিধি। তবে একবারের জন্যও ডেকে পাঠানো হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে। ইউজিসি প্রতিনিধি দল বেরিয়ে যাওয়ার সময় এমন কথাই শোনা গেল খোদ উপাচার্যের মুখে। সোমবার সকাল 11টা নাগাদ ইউজিসি'র চার প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয় আসেন। পিছনের গেট দিয়ে তারা অরবিন্দ ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর পৌনে সাতটা নাগাদ আবারও ওই গেট দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান ইউজিসি'র প্রতিনিধিরা।
গত মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে প্রায় তিনবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল ইউজিসি। ওই রিপোর্টের উত্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পাঠানো হলেও তাতে সন্তুষ্ট হননি তারা। অবশেষে ওই ঘটনার প্রায় 26 দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ইউজিসির চার প্রতিনিধি। সাড়ে সাত ঘণ্টা বৈঠক করলেও এদিন একবারের জন্য ডেকে পাঠানো হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে ৷ এমনটাই দাবি করেছেন উপাচার্য স্বয়ং। উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ বলেন, "আমি শুধুমাত্র জানি উনারা ইউজিসির লোক। সম্পূর্ণ অন্য ঘরে বসে ছিলেন। বলেছিলেন তারা না-ডাকা পর্যন্ত ওই ঘরে কারও প্রবেশাধিকার নেই। আমায় ডাকেনি, এমনকী কোনও রিপোর্টও দেয়নি। আমি কিছুই জানি না।"
যদিও সূত্র মারফৎ খবর, শুধু হস্টেল নয়, এবার পরিদর্শন করা হবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের থাকা মেসগুলিতেও। এমনকী গত 7 অগস্ট ছাত্র মৃত্যুর সপ্তাহের সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে কী কী হয়েছিল, সেই সম্পূর্ণ তথ্য ইউজিসির হাতে বিভাগের অধ্যাপকরা তুলে দেয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় পর্বের দিন র্যাগিং সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচার করা হয়েছিল কি না, সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পাশাপাশি ইউজিসি'র নিয়ম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কতটা মান্যতা দেওয়া হয়, তাও খতিয়ে দেখছেন তারা। তদন্তের প্রয়োজনে ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির চেয়ারম্যান সুবিনয় চক্রবর্তী ও মেন হস্টেলের দুটো ব্লকের সুপারদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন ইউজিসির প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ যাদবপুরে মৃত ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের
অন্যদিকে, মঙ্গলবার ইসরোর প্রতিনিধিরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার এবং বুধবার তারা পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এবং হস্টেল পরিদর্শন করতে পারেন এমনটাই জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তাঁর কথায়, "আমি আমার দলকে বলে রেখেছি। ওনারা মঙ্গলবার দুপুরে আসতে পারেন ৷ আবার বুধবার সম্পূর্ণ ঘুরে দেখবেন। আসলে এটা একটা গবেষণার বিষয় ৷ আমি বলেছিলাম যে এই পরিস্থিতিতে ওনাদের গবেষণা কোনওভাবে কাজে লাগানো যায় কি না, সেই সব কিছু দেখতেই উনারা আসবেন।"