কলকাতা, 22 মে : আমফানের দাপটে বিধ্বস্ত কলকাতা । ব্যাহত বিদ্যুৎ ও জল পরিষেবা । শহরকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে পৌরনিগমের তরফে দ্রুতগতিতে কাজ শুরু হয়েছে । এনিয়ে আজ কেবল অপারেটর, CESC-র সঙ্গে বৈঠক করেন পৌরনিগমের বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম । তবে সবকিছু স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি । তাঁর বক্তব্য, "ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে । কলকাতা স্বাভাবিক হতে কমপক্ষে সাতদিন সময় লাগবে । একটু ধৈর্য ধরতে হবে । কারণ আমি কোনও জাদুকর নই । আমার হাতে কোনও জাদুদণ্ড নেই । যা দিয়ে এক নিমেষের মধ্যে কলকাতাকে আবার স্বাভাবিক ও সচল করে দিতে পারব।"
আমফানের জেরে কলকাতায় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি গাছ উপড়ে পড়েছে । আড়াই হাজার বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে । ফলে বিদ্যুৎ নেই একাধিক জায়গায় । বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জলের সংকটও তৈরি হয়েছে। আজ এনিয়ে CSEC-র সঙ্গে বৈঠক করেন ফিরহাদ হাকিম । তিনি জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে অনেকে গৃহবন্দী রয়েছে । তাই তাঁরা যাতে সুস্থ থাকেন, সেজন্য দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে । যেসব রাস্তা গাছ পড়ে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে NDRF কর্মীরা কাজ করবেন। যেসব রাস্তা আংশিক বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে কলকাতা পৌরনিগমের উদ্যান বিভাগ কাজ করবে। পাশাপাশি ছোটো ছোটো রাস্তাগুলিতে পৌরনিগমের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ কাজ করবে। আগামী দু'দিনের মধ্যে কলকাতা শহরে বেশিরভাগ জায়গা থেকেই গাছ কেটে সরিয়ে ফেলা হবে । কলকাতায় যেখানে যত জল জমে আছে, তা দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ছোটো-বড় সবকটি পাম্পিং স্টেশন চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ।
তিনি আরও জানিয়েছেন, আজ পৌরনিগমের তরফে সমস্ত কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আগে গাছ কেটে সাফ করতে হবে । তারপর ধাপে ধাপে কলকাতার রাস্তাঘাট পরিষ্কার করার কাজ শুরু করতে হবে। জমা জল দ্রুত নিষ্কাশনের কাজও রয়েছে । মানুষের বাড়ি বাড়ি দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে হবে। পরের ধাপে কলকাতার দু'ধারে স্ট্রিট লাইটগুলি ঠিক করতে হবে । সেজন্য একজন নোডাল অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে।
ফিরহাদ হাকিম বলেন, "কেবল অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলেছি । তাদেরও বলেছি, যত দ্রুত সম্ভব কানেকশন চালু করে দেওয়ার জন্য। কলকাতা শহরকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে জোরকদমে চেষ্টা চলছে । কিন্তু সেজন্য কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমি কোনও জাদুকর নই । আমার হাতে কোনও জাদুদণ্ড নেই যে, রাতারাতি কলকাতাকে স্বাভাবিক করে দেব। তাও আগে থেকে কিছুটা প্রস্তুতি ছিল বলে বহু মানুষ প্রাণে রক্ষা পেয়েছে । মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে ।"