কলকাতা, 13 নভেম্বর: করোনার পর ডেঙ্গিতে (Dengue) মারাত্মক অবস্থা রাজ্যের । ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের । তবে শুধু ডেঙ্গি নয়, রয়েছে ম্যালেরিয়ার (Malaria) প্রভাবও । যার জেরে সমস্যায় পড়েছে আমজনতা । শুধু তাই নয়, যদি কারও করোনা (COVID) হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া কতটা ভয়াবহ হতে পারে ৷ জেনে নিন চিকিৎসকদের মুখ থেকে ৷
চিকিৎসক সুমন পোদ্দার বলেন, "যদি কেউ পূর্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে পরবর্তীকালে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়াতে তার খুব একটা সমস্যা হবে না ৷ তবে যদি ওই রোগীর কোমর্বিডিটি থাকে তাহলে সেখানে চিন্তা থাকছে ।
এ প্রসঙ্গে আরও এক চিকিৎসক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ম্যালেরিয়াতে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না । তবে ডেঙ্গিতে নিউমোনিয়া হয়ে থাকে অনেকেরই । ফলে কারও যদি করোনার জেরে ফুসফুসে সমস্যা হয়ে থাকে তারপর নিউমোনিয়া হলে, তখন তাকে শুধু প্লেটরেট নয়, অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে নিউমোনিয়ার দিকেও নজর দিতে হবে ।"
এর পাশাপাশি আরও একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে । জ্বর হওয়ার পর কোনও ব্যক্তি ডেঙ্গি নাকি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত, তা নিয়েও থেকে যাচ্ছে সংশয় । যার ফলে অনেকেই ভুল চিকিৎসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । এই বিষয়ে চিকিৎসক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "জ্বরের প্রথম দিন যদি কেউ ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া টেস্ট করায় তখন রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে । ভালো হয় যদি কেউ জ্বরের তৃতীয় দিনে 'ম্যালেরিয়ারপ্যালেফাইট' ও 'ডুয়েল অ্যান্টিজেন' টেস্ট করায় ম্যালেরিয়ার জন্য । আর এর সঙ্গে যদি 'এনএসওয়ান ডেঙ্গি' টেস্ট করা যায় তাহলে সব থেকে ভালো । তখনও যদি রিপোর্ট নেগেটিভ আসে ৷ অন্যদিকে জ্বর না কমে, তাহলে এই টেস্টটি জ্বরের পঞ্চম দিন আবারও পুনরায় করতে হবে ।"
তবে এখানেই শেষ নয়, রয়েছে আরও একটি বড় সমস্যা । ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকেই বুঝতে পারছেন না ঠিক কোন সময় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন । যার জেরে বহু মানুষই অনেকটাই দেরি করে ফেলছেন । চিকিৎসকদের কথায় এই সময় নষ্টের জন্যই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে বহু ।
আরও পড়ুন: টনক নড়ল অবশেষে! আগামী বছর শুরু থেকেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় তৎপর হবে কেএমসি
এ বিষয়ে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, "শুধু প্লেটলেট নজরে রাখলেই হয় না । এর পাশাপাশি প্রথম প্রধান যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হয় । যদি কোন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী বারবার বমি করে, দেহের কোন জায়গা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে, অসম্ভব পেটের যন্ত্রণা হচ্ছে, রক্তচাপ কমে যাচ্ছে তখন অবিলম্বে হাসপাতালে ভরতি হওয়া প্রয়োজন । সেগুলো একটা বড় অংশ এছাড়া পরীক্ষা করে দেখতে হয় যে ফুসফুস বা পেটের কোথাও জল জমছে কি না, তাহলেও কিন্তু এটা বড় সমস্যা তৈরি হয় ।"