কলকাতা, 20 এপ্রিল: 'বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকেই চাই', এমই দাবিতেই এবার পোস্টার পড়ল কলকাতায় ৷ শহরের বিভিন্ন রাস্তায়, মোড়ে, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকী স্কুলের সামনেও বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে এই হোডিং। আর তাতেই স্পষ্ট লেখা রয়েছে, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বহাল থাকুন মুখ্যমন্ত্রী।' ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও প্রফেসর সংগঠনের (ওয়েবকুপা) তরফে এই দাবি জানিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
জগদীপ ধনকড়ের আমলে রাজ্যপালকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলির আচার্য পদ থেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ওই পদে আসীন করে বিধানসভায় বিল পাশ করে রাজ্য সরকার ৷ এরপর সেই বিল রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য রাজভবনে পাঠানো হয়েছে ৷ অভিযোগ, রাজ্যে রাজ্যপাল পরিবর্তন হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নিয়ে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল এখনও ফাইলবন্দি হয়ে আটকে আছে রাজভবনেই ৷ এবার বিধানসভায় পাশ হওয়া সেই বিল অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে বলেও লেখা হয়েছে পোস্টারে। ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ ইউনিভার্সিটি ও প্রফেসর সংগঠনের পক্ষ থেকে এই হোর্ডিং কলকাতার পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে জেলাতেও।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ ইউনিভার্সিটি ও প্রফেসর সংগঠনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে 'জনরব' কর্মসূচি। জানা গিয়েছে, সেই কর্মসূচির মূল লক্ষ্যই হল বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলকে কার্যকর করানো। সংগঠনের তরফ থেকে কৃষ্ণকলি বসু বলেন, "পরাধীন ভারতের আমলে যে নিয়ম ছিল, আমরা স্বাধীন ভারতে তা মানব কেন? বিশ্বভারতীতে আচার্য হয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। উপাচার্যের ক্ষেত্রেও বদল এসেছে। তাহলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কেন মুখমন্ত্রী হবেন না?"
সংগঠনের দাবি, বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল যাতে দ্রুত কার্যকর হয়, সে কারণেই এবার তারা রাস্তায় নেমেছেন। বুধবার থেকেই শহর কলকাতার প্রধান প্রধান জায়গা গুলিতে হোর্ডিং, পোস্টার দেওয়া হয়েছে। জেলাতেও সমান ভাবে পোস্টার দেওয়ার কাজ চলছে। এটাকে তারা তাঁদের আন্দোলনের 'প্রথম পদক্ষেপ' বলছেন। এই হোর্ডিং দেওয়ার পাশাপাশি চলছে আমজনতাকে নিয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি। এরপর রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হবে বলেও সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে ৷ তাতেও সুরাহা না-হলে শেষে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের কার্যকলাপে অতিষ্ঠ, স্ট্যালিনকে ফোন মমতার
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তিনি রাজ্যপালের উদ্দেশে জানান, গত বছর বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল এখনও সই করেননি রাজ্যপাল। তা এখনও পড়ে আছে রাজভবনে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে 20 সপ্তাহের বেশি কোনও বিল রাজভবনে আটকে থাকতে পারে না। এমনকী রাজ্যপালকে তিনি অনুরোধ করেছেন, প্রয়োজনে ওই বিল রাজ্যপাল আবার ফেরত পাঠাতে পারেন। বিধানসভায় ফের তা পাশ করাবে শাসকদল। অন্যদিকে এই বিতর্কের মাঝেই বিশ্ববিদ্য়ালয় পরিদর্শনে যাচ্ছেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস ৷ এদিনও সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রাজ্যপাল ৷ এমনকী তিনি বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন ৷