কলকাতা, 27 ডিসেম্বর: ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে 'সোশাল মিডিয়া যোদ্ধা' এবং আইটি সেলের সঙ্গে বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এবার বাম আমলের সঙ্গে তৃণমূলের তুলনা টানলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু তুলনাই টানা নয়, মঙ্গলবার কার্যত শাহ স্বীকার করে দিলেন, "এখন তো মানুষ বলছে কমিউনিস্টরা অনেক ভালো ছিল তৃণমূল সরকারের থেকে ।"
কলকাতা সফরে এসে বিভিন্ন সময় অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডা তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেছেন। আইটি সেল থেকে পড়ে প্রকাশিত ভিস্যুয়াল এবং রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অমিত শাহর বক্তব্যের বেশ কিছু অংশ রাজ্য আইটি সেল পরে নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করে । আর সেই ভিডিয়ো থেকেই জানা যায়, অমিত শাহ ওইদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে এও জানিয়েছেন, এই রাজ্যে তৃণমূল সরকারের চেয়ে বাম আমল অনেক বেশি ভালো ছিল। তৃণমূলকে রীতিমতো এক হাত নিয়ে শাহের অভিযোগ, যে পরিমাণ দুর্নীতি এই আমলে অর্থাৎ তৃণমূল সরকারের আমলে হয়েছে তা অভাবনীয় ।
ওইদিন অমিত শাহ বলেন, "দিদি যখন এখানে কমিউনিস্টদের পরাজিত করেছিলেন, তখন দেশের মানুষ পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন আশা করেছিল। এখন কেউ কেউ এমনও বলছেন যে, দিদির শাসন কমিউনিস্টদের দিনের তুলনায় আরও ফ্যাকাশে। ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, এবং পশ্চিমবঙ্গের একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে 50 কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে।" এমনকি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশের স্বেচ্ছাচারী রাজার সঙ্গেও এদিন তুলনা করেন।
এছাড়াও দেশের নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও জানান অমিত শাহ। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে, আমরা সোশাল মিডিয়ার সাহায্যে নির্বাচনে জিততে পারি কারণ মিডিয়া দিদিকে ভয় পায়।" শাহের অভিযোগ, "পশ্চিমবঙ্গে দিদির ভয়ে, প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া জনসাধারণের কাছে বিজেপির মতামত প্রকাশ করতে দেয় না।" তাই সোশাল মিডিয়া যোদ্ধাদের বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি আরও বেশি করে প্রচার করার নিদান দেন তিনি। অমিত শাহ স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "2015 সালে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপিকে গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু তবুও বিজেপি কর্মীরা লোকসভায় 18টি আসন এবং বিধানসভায় 77টি আসন জিতেছিল। আগামী দিনে 35টি আসন পাব আমরা । সেটা দিদিও ভালোভাবেই জানেন। এবার মোদি সরকারে পশ্চিমবঙ্গ থেকে 35টি আসন আসবেই।"
তিনি মমতা সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, "স্বাধীনতার আগে বাংলা সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে ছিল বাংলা, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে বাংলা কালো টাকা, সিন্ডিকেট, অনুপ্রবেশ ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে। বাংলায় যেখানে আগে রবীন্দ্রসংগীত শোনা যেত, আজ সেখানে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। যখন বাংলা থেকে বামপন্থী শাসন উচ্ছেদ করা হয়েছিল, তখন গোটা দেশ এবং বাংলার মানুষ খুশি হয়েছিল, কিন্তু দিদি যেভাবে শাসন চালিয়েছেন তাতে জনগনের বক্তব্য হলো যে বামপন্থীরা এর চেয়ে ভাল ছিল।" অমিত শাহ বলেন, "যাদের বাড়ি থেকে 50-50 কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তাদের কনস্টেবল বলে ডেকেছেন দিদি, যখন কনস্টেবলের কাছে এত টাকা তখন মালিকদের কাছে কত টাকা থাকবে ?"
আরও পড়ুন