কলকাতা, ১ মার্চ : গতবছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় প্রিজ়াইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের মৃত্যুর কেস ডায়েরির সিডি জমা দিতে নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। ৭ মার্চ সিডি জমা করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক।
উত্তর দিনাজপুরের রহতপুর হাইমাদ্রাসার শিক্ষক রাজকুমার গতবছর পঞ্চায়েত ভোটের সময় রায়গঞ্জের সোনাপুর জুনিয়র বেসিক হাইস্কুলের ৪৮ নম্বর বুথের প্রিজ়াইডিং অফিসার ছিলেন। ১৪ মে ভোট শেষের পরদিনই সোনাদাগি রেললাইন থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার CBI তদন্ত দাবি করে হাইকোর্টে মামলা করেন তাঁর মা অন্নদা রায়।
আজ নথিপত্র দেখার পর বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন করেন, ১৪.০৫.১৮ তারিখ রাত ৮টা থেকে পরদিন দেহ পাওয়া পর্যন্ত রাজ্যের কী ভূমিকা ছিল? পুলিশ কি করছিল?এটা বলার পর তিনি কেসের সিডি চেয়ে পাঠান রাজ্যের AG কিশোর দত্তের কাছে।
গত বছর ১ অগাস্ট প্রিজ়াইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের মৃত্যুর ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাইকোর্টে পেশ করে CID। সেখানে বলা হয় মৃত্যু হয়েছে ট্রেন দুর্ঘটনায়। যদিও বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট ছিলেন না। কারণ মাথায়, বুকে আঘাত না থাকলেও মুখে ছিল আটটি আঘাতের চিহ্ন। মামলাটির এতদিন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে শুনানি চলছিল।
প্রসঙ্গত, ইটাহার থানার ১৫.০৫.২০১৮ তে বেলা ৪.৪৫ মিনিটে করা মিসিং ডাইরিতে লেখা হয় রাজকুমার রায় সোনাপুর জুনিয়র বেসিক হাইস্কুল ৪৮ নম্বর বুথ থেকে গত ১৪.০৫.২০১৮ তে রাত ৮ টা থেকে নিখোঁজ। এরপর সোনাদাগি রেললাইন থেকে ১৫.০৫.১৮ তে সন্ধ্যা ৭ টার সময় ডালখোলা GRPS তার দেহ উদ্ধার করে। অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী অর্পিতা বর্মন জানান ১৪.০৫.১৮ তারিখ রাত ৮ টার সময় সে তার স্বামীর সাথে ফোনে কথা বলে।
এর আগে মামলার শুনানিতে মামলাকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্যর বক্তব্য ছিল, "প্রশাসন প্রথম থেকেই এটাকে সুইসাইড বলে চালানোর চেষ্টা করছে। কিন্ত এটা আত্মহত্যা নয়। ভোটের রিগিং-এর বিরোধিতা করায় তাকে অপহরণ করা হয় এবং পরদিন রেল লাইনের ধার থেকে তার দেহ পাওয়া যায়।" আরও একবার ময়নাতদন্ত করার আর্জি করে তিনি জানান পূর্ববর্তী ময়নাতদন্তের ভালো করে ভিডিও করা হয় নি। তিনি বিচারপতির উদ্দেশে আরও বলেন, ডাক্তারি রিপোর্টে দেখা গেছে তার মুখের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, "রাজ্যসরকার রাজকুমারের স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছে। কিন্ত যদি এটা সাধারণ আত্মহত্যার ঘটনা হত, তাহলে কি সরকার এই চাকরি দিত বলে মনে হয়?"