কলকাতা, 9 অক্টোবর: ডেঙ্গি পরীক্ষা করতে এলে রেজিস্ট্রারে লেখাতে হয় নাম, ঠিকানা ও বয়সের তথ্য । যাতে পজিটিভ হলে তার খেয়াল রাখা, তাকে নিয়মিত সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন স্বাস্থ্যকর্মীরা । তবে বড়বাজার এলাকায় দেখা যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকরা, দোকানকর্মীরা অনেকেই মনগড়া ঠিকানা দিচ্ছেন । ফলে খামোখা পজিটিভ কেস বেড়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে । তথ্য তৈরিতে প্রভাব পড়ছে । খোঁজ মিলছে না রোগীর । কালঘাম ঝড়ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের ।
তাই এই সমস্ত হয়রানি ঠেকাতে এবার কলকাতা কর্পোরেশনের স্বাস্থ্যবিভাগ নয়া নির্দেশিকা দিতে চলেছে । এবার থেকে ডেঙ্গি পরীক্ষার ক্ষেত্রে স্থায়ী ঠিকানার পাশাপাশি অস্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে । বড়বাজার এলাকার কাউন্সিলর ইলোরা সাহা অভিযোগ করেন, ওয়ার্ডে বহু পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে । দোকানকর্মীও থাকেন । আবার তাদের পরিজনরা বাইরে থাকলেও বা অন্য ওয়ার্ডের অনেকেই আসছেন ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করতে । কিন্তু নাম, বয়সের সঙ্গে আমার ওয়ার্ডের ভুয়ো ঠিকানা লিখে যাচ্ছেন । ফলে ওয়ার্ডে দুটো ডেঙ্গি রোগী বাস্তবে থাকলেও আমদের রেজিস্ট্রার যা প্রতিদিন কেন্দ্রীয় পৌরভবনে পাঠাই সেখানে সংখ্যাটা 12-15 হয়ে যাচ্ছে । আবার ওই ঠিকানায় স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে দেখছে সেই রোগী সেখানে আদৌ থাকেন না । ফলে আধার কার্ড বা অন্য কোনও পরিচয়পত্র করোনার মতো ডেঙ্গির ক্ষেত্রেও বাধ্যতামূলক করা হোক ।
আরও পড়ুন : ডেঙ্গি জ্বরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়েছে ? খেতে পারেন এইগুলি
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমস্যা 20, 21, 22, 23, 24, 26, 41, 42, 43 ওয়ার্ডে বেশি । বাকি ওয়ার্ডগুলোতে একদম যে নেই তা নয় । এবার থেকে এই সমস্যা মেটাতে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষার ক্ষেত্রে সব তথ্যের সঙ্গে স্থায়ী ও অস্থায়ী দুই ঠিকানাই নেওয়া হবে । যাতে তারা বুঝতে পারেন ওয়ার্ডের বাইরে কারা রয়েছেন । সেটা অন্য ওয়ার্ডের ভিন জেলার, নাকি ভিন রাজ্যের বাসিন্দা । পৌর মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এই নির্দেশিকা জারি করতে চলেছেন ।
এই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, "আমরা নিয়ম অনুসারে আমদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা রোগী কলকাতা এলাকার বাইরে হলেও এমনকি ভিন রাজ্যের হলেও তাকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে থাকি । ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া কোন ওয়ার্ডে কী পরিস্থিতি সেই তথ্য আমাদের কাছে নিয়মিত আসে । কেউ ভুয়ো ঠিকানা দিলে যেমন সেই ওয়ার্ডে সংখ্যা বেড়ে যায় খাতায় কলমে, তেমনই স্বাস্থ্যকর্মীরা নাজেহাল হন রোগীর খোঁজ করতে গিয়ে । আমরা আধার কার্ড চাইতে পারি না । ফলে এখন থেকে স্থায়ী ঠিকানার সঙ্গে বিশেষ করে যেখানে এমন পরিযায়ী শ্রমিক বা দোকানকর্মী আছেন অস্থায়ীভাবে তাঁরা কোথায় থাকেন সেই ঠিকানাও দিতে হবে । তাহলে রোগীকে দেখভাল করতে যেমন সুবিধা হবে তেমন নির্দিষ্ট ভাবে তথ্য থাকবে পৌরনিগমের কাছে ।"
আরও পড়ুন : গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গি হতে পারে বিপজ্জনক ! জেনে নিন কীভাবে মা ও শিশুর যত্ন নেবেন