কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি : এ বছর ভোটের মরশুমে মার্চ-এপ্রিল মাসজুড়ে রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে । ওই সময় ইন্টার্ন ডাক্তারদের সম্ভাব্য অভাবের জেরে এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে । চিকিৎসকরা বলছেন, আচমকা এই ধরনের পরিস্থিতি এর আগে তৈরি হয়নি । এই ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দফরের তরফে আগে থেকে পরিকল্পনা গ্রহণ করার প্রয়োজন ছিল ।
বুধবার এ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন । আর, এই ভোটের মরশুমের মধ্যেই আগামী মার্চ এবং এপ্রিল মাসজুড়ে রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে । ঠিক কী কারণে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে? জানুয়ারি মাসে এমবিবিএস-এর ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষার শেষে এক বছরের ইন্টার্নশিপ করেন মেডিকেল পড়ুয়ারা । করোনার কারণে এ বছর পরীক্ষা শেষ হতে আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে যাবে । আর তাই মে মাসের প্রথম সপ্তাহের আগে নতুন ইন্টার্ন ডাক্তারদের পাওয়ার সম্ভাবনা কম ।
এদিকে, এখন যারা ইন্টার্ন ডাক্তার, মার্চ মাসের শুরুতে তাদের ইন্টার্নশিপের মেয়াদ শেষ হচ্ছে । এর ফলে, মার্চ এবং এপ্রিল মাস জুড়ে রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলিতে ইন্টার্ন ডাক্তারদের অভাব হতে পারে । মেডিকেল কলেজগুলিতে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ইন্টার্ন ডাক্তারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে । ওই আশঙ্কার বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যর বক্তব্য পাওয়া যায়নি ।
আরও পড়ুন : আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে কলকাতা মেডিকেলের ডেপুটি সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
তবে, রাজ্যের এক প্রাক্তন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, "এই ধরনের পরিস্থিতি আচমকা তৈরি হয়নি । এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আগে থেকে পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজন ছিল ।" তিনি বলেন, "ইন্টার্নশিপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সকলেই কাজের সুযোগ পান না । তাই, এই সমস্যা এড়ানোর জন্য ইন্টার্নশিপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ওই দুই মাসের জন্য ইন্টার্ন ডাক্তারদের রাখা যেতে পারে । তার উপর, এমন অনেকেই আছেন যারা কাজ করতেও চায় ।"
এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক তথা চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "এমন হওয়ার কথা নয় । হাসপাতালগুলিতে এখন নন-কোভিড রোগীদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে । এদিকে, মেডিকেল কলেজগুলিতে ইন্টার্ন ডাক্তারদের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এই অবস্থায় যদি সত্যিই মেডিকেল কলেজগুলিতে এই দুই মাস ইন্টার্ন ডাক্তারদের না পাওয়া যায়, তাহলে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা থেকে যায় ।"
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সম্ভাব্য পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার লক্ষ্যে মেডিকেল কলেজগুলিতে হাউসস্টাফ নিয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে । তবে, এ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটের আদর্শ আচরণবিধি জারি হওয়ায় হাউসস্টাফ নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটতে পারে ।