কলকাতা, 2 অগস্ট: সেনাবাহিনীতে পাক চর সন্দেহ মামলায় সিবিআইকে অবিলম্বে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন আদালতে সিবিআই'য়ের আইনজীবী একটি রিপোর্ট দিয়ে জানায়, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তো বটেই এমনকী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই অভিযোগের গুরুতর ভূমিকা আছে। জাল নথি দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত-সহ অন্য রাজ্য থেকে এমন নথি নিয়ে বাহিনীতে নিয়োগ হচ্ছে। পাশাপাশি এসডিও'র স্বাক্ষর করা শংসাপত্রও রয়েছে ওই নথিতে ৷ অথচ এসডিও স্বীকার করছেন না যে ওই স্বাক্ষর তাঁরই। শুধু ডোমিসাইল নয়, এসডিও-ওবিসি শংসাপত্র দেওয়ারও নজির রয়েছে এক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে শূন্যপদে 6 মাসের মধ্যে নিয়োগ চাইলেন শুভেন্দু
এ রাজ্যের উত্তর 24 পরগনায় এমন কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন নিয়োগের অভিযোগ পেয়েছে সিবিআই। এখনও চারটি ক্ষেত্রে এমন ঘটনা হাতে পেয়েছে সিবিআই। এই রাজ্য শুধু নয়, প্রতিবেশী রাজ্য বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত এলাকাতেও একই অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। কোনও বিদেশি নাগরিকের এমন চাকরি পাওয়ার ঘটনা হাতে না-পেলেও তা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ইন্টার পোলের সাহায্যও নেওয়া হতে পরে। এটা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় হুমকি। বেশ কিছু সরকারি আধিকারিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত, এমনই ইঙ্গিত সিবিআইয়ের।
বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত এলাকার রাজ্য বলে কম নম্বরে এখানে বাহিনীতে নিয়োগের একটা সুযোগ আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভিনরাজ্যের নাগরিকরা জাল ডোমিসাইল সার্টিফিকেট চক্রের মাধ্যমে ঢুকে পড়ছে বাহিনীতে। তাদের সহযোগিতা করছেন একজন এসডিও, যা অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।" তিনি সিবিআইকে দ্রুত এফআইআর করে এখনই তদন্ত শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন এই মামলায়। যতদিন না সিবিআই এই তদন্তের রিপোর্ট দিচ্ছে ততদিন মামলাকারী বিষ্ণু চৌধুরীর নিরাপত্তা প্রদান করবে পুলিশ।
আরও পড়ুন: হাতুড়ি পিটিয়ে ভাঙা হচ্ছে মাথায় রাখা নারকেল, বুকের বরফ; সেনাকর্মীদের কীর্তিতে মজল জলপাইগুড়ি
কারণ, তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বলে আদালতে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন বিষ্ণু চৌধুরী। আদালত মামলাকারীকে আগামিকালের মধ্যে এসপি হুগলির কাছে নিরাপত্তার আবেদন করতে নির্দেশ দিয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে আবেদন বিবেচনা করবেন এসপি। এর আগে শুধু সেনা বাহিনীতে নয়, কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীতেও জাল নথি দিয়ে নিয়োগের হদিশ দিয়েছিল সিআইডি। তবে পাকিস্তানী নাগরিককে জাল নথি নিয়ে এদেশের সেনা বাহিনীতে থাকার কোনও হদিশ তারা পায়নি বলে আদালতে জানায় রাজ্য। উল্লেখ্য, মগরার বাসিন্দা বিষ্ণু চৌধুরী নামে এক ব্যাক্তি অভিযোগ করেন, তাঁর পরিচিত মহেশ চৌধুরী ও রাজু গুপ্তা নামে দুই ব্যক্তি যারা ভারতীয় সেনায় নিযুক্ত, তারা টাকার বিনিময়ে এমন চক্র চালায়।