ETV Bharat / state

Pohela Boishakh 2023: ডিজিটাল লেনদেন কেড়েছে বাঙালির 'হালখাতা', কেমন আছেন এই জাবদা খাতার ব্যবসায়ীরা

পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা ৷ লাল-রঙের কাপড়ের মলাটে মোড়া জাবদা খাতা এক সময় মুদিখানা দোকান থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব দোকানেই দেখা যেত ৷ বর্তমানে এই খাতার চাহিদা অনেকাটই কমেছে ৷ জায়গা করে নিয়েছে কম্পিউটার ৷ জেনে নিন হালখাতার 'হাল হকিকত' ৷

Etv Bharat
জাবেদা খাতার ব্যবসায়ী
author img

By

Published : Apr 10, 2023, 9:15 PM IST

ডিজিটাল লেনদেন কেড়েছে বাঙালির হালখাতা

কলকাতা, 10 এপ্রিল: মাথার উপর সূর্যের গনগনে আঁচ আর পায়ের নীচে তপ্ত মাটি জানান দিচ্ছে চৈত্র শেষ লগ্নে এসে গিয়েছে ৷ কয়েকদিন পরেই পয়লা বৈশাখ ৷ আর বৈশাখের আগমনের বার্তা আসে 'হালখাতা' দিয়ে ৷ পয়লা বৈশাখ ও অক্ষয় তৃতীয়া অস্পূর্ণ থেকে যায় হালখাতা ছাড়া ৷ 'হালখাতা' শব্দটা বাংলার নববর্ষের সঙ্গে খুবই ঐকান্তিকভাবে জড়িত । নতুন বছরের পয়লা বৈশাখ বা অক্ষয় তৃতীয়ায় ব্যবসায়ীরা পুরনো হিসেব নিকেশ শেষ করে নতুন হিসেব শুরু করেন । আর সেই হিসেব লেখা হয় এই হাল খাতায় । তাই চৈত্রের শেষ আসতে না-আসতেই দোকানে দোকানে চাহিদা বাড়ে হাল খাতার । কিন্তু এই চৈত্রে সেই চেনা ছবি উধাও । নেই ক্রেতাদের লম্বা লাইন ৷ শেষ বেলায় এসেও জাবদা খাতার দোকানগুলো মাছি তাড়াচ্ছে ।

বলা যায় হাল খাতার হাল 'বেহাল' । তাই ব্যবসাও 100 শতাংশ থেকে 2 শতাংশে নেমে এসেছে । এই সময় দোকানের সামনে লাল চাদর পেতে ভর্তি ভর্তি খাতা রাখা থাকত । খুচরো বিক্রেতা নিয়ে যেত। আবার পাইকারী দরে বিভিন্ন জোলাতেও ব্যবসা করতেন ব্যবসায়ীরা ৷ এই বছর যেন ছন্দ পতন ঘটেছে ৷ বৈশাখ শুরুর 5 দিন আগেও এক প্রকার মাছি তাড়াচ্ছন দোকানিরা ৷ এতদিন পুরনো যাদের অর্ডার দিয়েছেন তাদের ফোন করে আবার অর্ডার তোলার চেষ্টা করছেন ব্যবাসায়ীরা । তাতেও খুব একটা সাড়া পাচ্ছেন না-বলেই জানালেন আফরোজ আলম খান ৷ একরাশ হতাশা আর আক্ষেপের সুর ৷ তিনি বলেন, "ক্রেতারা বলছে ব্যবসা নেই খাতা নিয়ে কি করব । 10-20 টাকার এমনই খাতা নিয়ে পুজো করব ৷"

ETV Bharat
চৈত্রের শেষে খাতা তৈরিতে ব্যস্ত কর্মীরা

ক্রেতাদের এই কথাতেই মাথায় হাত বৈঠকখানাবাজার, বড়বাজার, কলেজ স্ট্রিট এলাকার বেশ কিছু দোকান মালিকদের ও কর্মীদের । এই এলাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ী পূর্ব পুরুষের সময় থেকে ব্যবসা করেন খাতার ৷ বৈঠকখানা বাজারের দোকানদার আফরোজ আলম খান বলেন, "সার্বিক ব্যবসার বেহাল দশা তাদের হালখাতা ব্যবসায় ছাপ পড়ছে । আবার ব্যবসা কিছুটা কমেছে কম্পিউটার ও অনলাইন লেনদেন হওয়ার কারণে ৷ কিন্তু বড় ধাক্কা করোনা । মানুষের ব্যবসা শেষ হয়ে গিয়েছে । তাই হালখাতার প্রয়োজনও কমেছে । মানুষের হাতে টাকা নেই । অনেকেই এই ব্যবসা দু’পুরুষ, তিন পুরুষ ধরে করছে । তাদের আসানসোল, বর্ধমান, নদীয়া, হাওড়া থেকে পাইকারি ব্যবসাদার এসে কিনে নিয়ে যেত এখন আর তারা নেয় না ।"

এই এলাকারই আরও এক কারখানায় তৈরি হচ্ছে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে হতে গোনা কিছু জাবদা, খতিয়ান ডাক, খানা, সুপার ডে বুক, লেটার খাতা ।সেখানকার কারিগর শেখ মতিয়ার রহমন জানান, আগে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে থেকে শুরু হত কাজের অর্ডার ৷ চলতি বছরে অর্ডার অনেকটাই কমেছে ৷ গতবার একটু অর্ডার ছিল । এর মধ্যেই বেড়েছে কাগজের দাম । খরচ বেড়েছে। বেড়েছে মজুরি । তাই খাতার দামও বেড়েছে ৷ অথচ ক্রেতা নেই ৷ এক কথায় বলা যায় নববর্ষে বেহাল দশা বাঙালির 'হাল খাতার'৷

ডিজিটাল লেনদেন কেড়েছে বাঙালির হালখাতা

কলকাতা, 10 এপ্রিল: মাথার উপর সূর্যের গনগনে আঁচ আর পায়ের নীচে তপ্ত মাটি জানান দিচ্ছে চৈত্র শেষ লগ্নে এসে গিয়েছে ৷ কয়েকদিন পরেই পয়লা বৈশাখ ৷ আর বৈশাখের আগমনের বার্তা আসে 'হালখাতা' দিয়ে ৷ পয়লা বৈশাখ ও অক্ষয় তৃতীয়া অস্পূর্ণ থেকে যায় হালখাতা ছাড়া ৷ 'হালখাতা' শব্দটা বাংলার নববর্ষের সঙ্গে খুবই ঐকান্তিকভাবে জড়িত । নতুন বছরের পয়লা বৈশাখ বা অক্ষয় তৃতীয়ায় ব্যবসায়ীরা পুরনো হিসেব নিকেশ শেষ করে নতুন হিসেব শুরু করেন । আর সেই হিসেব লেখা হয় এই হাল খাতায় । তাই চৈত্রের শেষ আসতে না-আসতেই দোকানে দোকানে চাহিদা বাড়ে হাল খাতার । কিন্তু এই চৈত্রে সেই চেনা ছবি উধাও । নেই ক্রেতাদের লম্বা লাইন ৷ শেষ বেলায় এসেও জাবদা খাতার দোকানগুলো মাছি তাড়াচ্ছে ।

বলা যায় হাল খাতার হাল 'বেহাল' । তাই ব্যবসাও 100 শতাংশ থেকে 2 শতাংশে নেমে এসেছে । এই সময় দোকানের সামনে লাল চাদর পেতে ভর্তি ভর্তি খাতা রাখা থাকত । খুচরো বিক্রেতা নিয়ে যেত। আবার পাইকারী দরে বিভিন্ন জোলাতেও ব্যবসা করতেন ব্যবসায়ীরা ৷ এই বছর যেন ছন্দ পতন ঘটেছে ৷ বৈশাখ শুরুর 5 দিন আগেও এক প্রকার মাছি তাড়াচ্ছন দোকানিরা ৷ এতদিন পুরনো যাদের অর্ডার দিয়েছেন তাদের ফোন করে আবার অর্ডার তোলার চেষ্টা করছেন ব্যবাসায়ীরা । তাতেও খুব একটা সাড়া পাচ্ছেন না-বলেই জানালেন আফরোজ আলম খান ৷ একরাশ হতাশা আর আক্ষেপের সুর ৷ তিনি বলেন, "ক্রেতারা বলছে ব্যবসা নেই খাতা নিয়ে কি করব । 10-20 টাকার এমনই খাতা নিয়ে পুজো করব ৷"

ETV Bharat
চৈত্রের শেষে খাতা তৈরিতে ব্যস্ত কর্মীরা

ক্রেতাদের এই কথাতেই মাথায় হাত বৈঠকখানাবাজার, বড়বাজার, কলেজ স্ট্রিট এলাকার বেশ কিছু দোকান মালিকদের ও কর্মীদের । এই এলাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ী পূর্ব পুরুষের সময় থেকে ব্যবসা করেন খাতার ৷ বৈঠকখানা বাজারের দোকানদার আফরোজ আলম খান বলেন, "সার্বিক ব্যবসার বেহাল দশা তাদের হালখাতা ব্যবসায় ছাপ পড়ছে । আবার ব্যবসা কিছুটা কমেছে কম্পিউটার ও অনলাইন লেনদেন হওয়ার কারণে ৷ কিন্তু বড় ধাক্কা করোনা । মানুষের ব্যবসা শেষ হয়ে গিয়েছে । তাই হালখাতার প্রয়োজনও কমেছে । মানুষের হাতে টাকা নেই । অনেকেই এই ব্যবসা দু’পুরুষ, তিন পুরুষ ধরে করছে । তাদের আসানসোল, বর্ধমান, নদীয়া, হাওড়া থেকে পাইকারি ব্যবসাদার এসে কিনে নিয়ে যেত এখন আর তারা নেয় না ।"

এই এলাকারই আরও এক কারখানায় তৈরি হচ্ছে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে হতে গোনা কিছু জাবদা, খতিয়ান ডাক, খানা, সুপার ডে বুক, লেটার খাতা ।সেখানকার কারিগর শেখ মতিয়ার রহমন জানান, আগে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে থেকে শুরু হত কাজের অর্ডার ৷ চলতি বছরে অর্ডার অনেকটাই কমেছে ৷ গতবার একটু অর্ডার ছিল । এর মধ্যেই বেড়েছে কাগজের দাম । খরচ বেড়েছে। বেড়েছে মজুরি । তাই খাতার দামও বেড়েছে ৷ অথচ ক্রেতা নেই ৷ এক কথায় বলা যায় নববর্ষে বেহাল দশা বাঙালির 'হাল খাতার'৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.