কলকাতা, 16 জুন: আর 'হোম অ্যাসাইনমেন্ট' নয় ৷ এবার পরীক্ষা নেওয়া হোক অফলাইনে স্কুলে বসেই ৷ এই দাবিতে বৃহস্পতিবার কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল (The Scottish Church Collegiate School) কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন অভিভাবকদের একাংশ ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা মাঝপথে থমকে যায় ৷ পরবর্তীতে, স্কুলে তরফে নোটিশ দিয়ে জানানো হয়, বাদবাকি পরীক্ষাগুলি বাড়ি থেকেই দিতে পারবে পড়ুয়ারা ৷ তাদের কাছে 'হোম অ্যাসাইনমেন্ট' পাঠিয়ে দেওয়া হবে ৷ সেই অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে স্কুল খোলার পর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে ৷
স্কুলের এই ব্যবস্থাপনায় খুশি নন অভিভাবকদের একটা বড় অংশ ৷ তাঁরা চান, পড়ুয়ারা নিয়মিত স্কুলে যাক এবং সেখানেই চিরাচরিত নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিক ৷ এদিন অভিভাবকদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আর কয়েকটা দিন স্কুল খোলা থাকলেই পরীক্ষা মিটে যেত ৷ কিন্তু, সরকার আচমকা গরমের বর্ধিত ছুটি ঘোষণা করায় পুরো প্রক্রিয়াই থমকে গিয়েছে ৷ এই প্রেক্ষাপটে গত 14 জুন 'হোম অ্যাসাইনমেন্ট' সংক্রান্ত নোটিশ জারি করে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৷
আরও পড়ুন: Online Exam : কলেজের অনুষ্ঠানে ভিড় জমিয়েও কেন অনলাইন পরীক্ষার দাবি, উঠছে প্রশ্ন
স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের অভিভাবক ফোরামের সভাপতি দেবাশিস ধর এই প্রসঙ্গে বলেন, "স্কুলের নোটিশ থেকে আমরা জানতে পারি, প্রথম পর্বের বাকি পরীক্ষা 'Home Assesment'-এর মাধ্যমে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল ৷ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় স্কুল অভিভাবকদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি ৷ অথচ, প্রতিটি ক্লাসের প্রতিটি সেকশনের 'হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ' আছে ৷ সেখানে অনায়াসে অভিভাবকদের মতামত নেওয়া যেত ৷ আমরা, অভিভাবকরা মনে করি 'Home Assignment'-এর নামে পরীক্ষা নেওয়ার এই প্রহসন এবার বন্ধ হওয়া দরকার ৷ গত দুই বছর ধরে এই প্রহসন চলছে ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের অসৎ উপায়ে পরীক্ষা দিতে সরাসরি উৎসাহিত করেছে ৷ এতে পড়ুয়াদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে মেধাবী পড়ুয়াদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে ৷ রাজ্য সরকার গরমের ছুটি আরও 11 দিন বাড়িয়েছে ৷ এই বিষয়ে স্কুলের কিছু করার নেই ৷ তাই 'Home Assignment' প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিভাবকরা ৷"
এই বিষয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষকের প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য তাঁকে ফোন করা হলেও কোনও সাড়া মেলেনি ৷ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বই দেখে অনলাইন পরীক্ষা, অকৃতকার্য হওয়ার পরও পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভের মতো বিভিন্ন ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য ৷ সেখানে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের এই ঘটনা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ৷