কলকাতা, 14 জুলাই: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পেশ করা রিপোর্টে সন্তষ্ট হলেন না রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস । জানা যাচ্ছে, রিপোর্ট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি । রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালীন রাজ্যপাল বেশ কয়েকটি বিষয় জানতে চেয়েছিলেন কমিশনারের কাছে। সেই সব প্রশ্নের উত্তরেই এই রিপোর্ট পাঠিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহা। রাজভবন সুত্রের খবর, এই রিপোর্টে সন্তুষ্ট নন রাজ্যপাল । তবে, ঠিক কোন কোন বিষয় ঘিরে রাজ্যপাল প্রশ্ন তুলেছেন, তা স্পষ্ট করেনি রাজভবন।
ভোটের আগেই স্পর্শকাতর বুথ ঘিরে সংশয় তৈরি হয়। বিএসএফ-এর আইজি ও জানিয়েছিলেন, একাধিকবার তলব করার সত্ত্বেও স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা কমিশন দিয়ে পারেনি। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিজে এই অভিযোগ নস্যাৎ করেন। রাজ্যপালের কমিশনের কাছে চাওয়া রিপোর্টেও ছিল স্পর্শকাতর বুথের প্রসঙ্গ । রিপোর্ট বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর বুথের একটি তালিকা জেলা শাসক ও এসপিদের রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। যে তালিকা কমিশনে জমা পড়ে 6 জুলাই ৷ পর্যবেক্ষকদের রিপোর্টের ভিত্তিতে মোট 4,838টি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্যে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয় । আদালতের রায় মেনে ভোট শেষ হওয়ার পর 10 দিন পর্যন্ত মোতায়েন থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
রিপোর্ট ঘিরে রাজ্যপাল সংশয় প্রকাশ করলেও কমিশন সূত্রের খবর, নির্বাচনের দিন রাজভবন থেকে আসা প্রত্যেকটা অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন । যার প্রত্যেকটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে । রাজ্যপালের কাছে পেশ করা কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নির্বাচনের দিন রাজভবনের পিস রুম থেকে প্রায় 2 হাজার অভিযোগ কমিশনের কাছে আসে। রাজভবন থেকে এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে 177টি অভিযোগ আসে যেগুলির দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এছাড়া রাজভবনের পিস রুম থেকে আরও 494টি অভিযোগ আসে, যেগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়।
রিপোর্ট কমিশন দাবি, শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট গণনা হয়েছে । কয়েকটি গণনাকেন্দ্রের বাইরে জমায়েত ছাড়া আর কোনও বিশৃঙ্খলার খবর মেলেনি। গণনা কেন্দ্রের বাইরে দুষ্কৃতী বা সন্দেহজনকভাবে যারা ঘোরাফেরা করছিল তাদের আটক করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, গণনা ঘিরে বাংলায় চলা হিংসার কথা কেন উল্লেখ করেনি কমিশন, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে রাজভবন।
বিরোধীদের অভিযোগ, মনোনয়ন জমা থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত অশান্ত থেকেছে বাংলা । অনেক জায়গায় প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। রাজ্যপালকে দেওয়া রিপোর্টে কমিশনের দাবি, 2018 তুলনায় 2023 পঞ্চায়েত নির্বাচনে 42 শতাংশ বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যাও 2018 তুলনায় অনেক বেশি। 2018 পঞ্চায়েত নির্বাচনে 1 লক্ষ 15 হাজার প্রার্থী ৷ 2023 সেই সংখ্যা বেড়ে 2 লক্ষ 6 হাজার ৷ রাজভবন সূত্রের খবর, কমিশনের পেশ করা এই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের উপর প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল ।