কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর: উপাচার্য নিয়োগ বিলে সই না করা নিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট । মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই প্রশ্ন তুলেছে ৷ রাজভবনের হলফনামাও তলব করা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, অর্ডিন্যান্সের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে সার্চ কমিটি সংক্রান্ত সংশোধনী ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল’ পাশ হয় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় । বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর আইনে পরিণত হয়নি ৷ কারণ, ওই বিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় পড়ে আছে । যা নিয়ে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে । সেই মামলায় বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "আমরা শুধু সময় নিয়ে ভাবছি । রাজ্যপাল কে কোনও ভাবে শোকজ করা যায় না । কিন্তু সাংবিধানিক সংকট তৈরি হলেও কি আদালত প্রশ্ন করতে পারে না ?"
সংবিধান সময় বেঁধে না দিলেও এক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত সময় ধরে নেওয়া হয়, পর্যবেক্ষণ বিচারপতির । এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা ও রাজ্যপাল উত্তর দিতে পারেন কি না, সেটা হলফনামা পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ । এ ব্যাপারে রাজ্যপালকে হলফনামা দিতে হবে 4 অক্টোবর ।
এ দিন আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্ত বলেন, ‘‘উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের কাছে তিনটি বিল পাঠানো হয়েছে । এখনও সেই বিল সই করেননি তিনি ৷ এদিকে উপাচার্য পদের সময়সীমা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ হয়ে আসছে । অযথা সময় নষ্ট করছেন রাজ্যপাল । এভাবে তিনি বিল আটকে রাখতে পারেন না । 15 জুন 2022 বিলটি রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছিল । 7 জুন বিধানসভায় পাস হয়েছে । এখনও সেই বিল সাক্ষর হয়নি ।’’
অন্যদিকে রাজ্যপালের তরফে আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, "এই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্যেশ্যপ্রণোদিত ।আবেদনকারী তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় একজন সদস্য । উত্তর 24 পরগনায় তৃণমূল কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি ।রাজ্যপালের উপাচার্য নিয়োগের অধিকার আছে । সাংবিধানিক অধিকার । সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে ।"
বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমরা রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ওয়াকিবহাল নই ৷ আমরা সাংবিধানিক কাজ নিয়ে ওয়াকিবহাল ।"
আবেদনকারী আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্ত আরও বলেন, "রাজ্যপালের এই উপাচার্য নিয়োগে কোনও ক্ষমতা নেই । তার প্রমাণ আমরা আদালতে জমা করেছি । ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি আইন অনুযায়ী রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগের বিল আটকে রাখতে পারেন না ।"
আপাতত 4 অক্টোবর রাজ্যপাল হলফনামা দিয়ে কি বক্তব্য জানান, সেটাই দেখার ৷ তবে মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশ আসার পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘‘কোর্ট যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটাকেই স্বাগত জানাচ্ছি ।’’
আরও পড়ুন: আইন মেনেই অস্থায়ী ভিসি নিয়োগ, দাবি রাজ্যপালের; দিলেন ফাইল 'আটকে রাখার' ব্যাখ্যা