কলকাতা, 10 অগস্ট: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নানান পদক্ষেপ-বক্তব্যে 'বিরক্ত' মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকার। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন রাজভবনে কর্মরত সরকারি কর্মী ও আধিকারিকরা। কারণ, গত দু'সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজভবনের সরকারি কর্মচারী- আধিকারিকদের হাজিরা চেক করছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বেশ কয়েকটি দফতরের হাজিরা খাতা রাখা রয়েছে রাজ্যপালের এডিসি'র রুমে ৷
সূত্রের দাবি, সপ্তাহ দুই আগে আচমকাই অফিস টাইমে রাজভনের বিভিন্ন দফতরে ঢোকেন রাজ্যপাল। কোন দফতরের, কোন কর্মী বা আধিকারিক সঠিক সময়ে অফিসে ঢোকেননি সেইসব খোঁজখবর নেন। সেদিনই দেরিতে অফিসে ঢোকা কয়েকজন কর্মীকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। একইসঙ্গে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয় তাঁদের থেকে। যাতে আগামী দিনে দেরিতে অফিস ঢোকা কিংবা আচমকাই অফিসের কাজে 'ডুব' দেওয়ার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না-ঘটে।
এর ফলে, সাবধানে পা ফেলতে শুরু করেছেন রাজভবনে কর্মরত কর্মীদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কর্মীই আবার বলছেন, "হাজিরা চেক করা কী রাজ্যপালের কাজ!" যদিও রাজভবনের পদস্থ কর্তাদের বক্তব্য, "রাজ্যপালের এই পদক্ষেপে রাজভবনে সুষ্ঠ কর্ম সংস্কৃতি বজায় থাকবে।" সূত্রের দাবি, রাজভবনে সরকারি আধিকারিকদের সপ্তাহে শনি ও রবি দু'দিন ছুটি থাকে। এখন অধিকাংশ সপ্তাহে শনিবারও অফিসে আসতে হচ্ছে। যে কারণে কর্মীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
তবে, এই রেওয়াজটা বিগত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের আমল থেকে শুরু হয়েছে। যে পরিস্থিতির এখনও তেমন বদল হয়নি। রাজভবনের এক সরকারি কর্মীর বক্তব্য, "এখন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সন্ধে ছ'টার পরে বিভিন্ন দফতরের কর্মীদের খোঁজ করছেন রাজ্যপাল। যেটা নির্ধারিত অফিস টাইমের বাইরে। ফলে, রোজ রোজ নির্ধারিত অফিস টাইমের পরেও রাজভবনে থাকাটাও চাপের। কারণ, পরের দিন ফের নির্দিষ্ট সময়ে অফিস ঢোকার বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। না-হলে মুচলেকা দিতে হবে। সব মিলিয়ে ওই 'মুচলেকা'র চাপে রয়েছেন রাজভবনের কর্মীদের একাংশ।
আরও পড়ুন: 'কালো চশমা পরে জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছেন', উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ফের রাজ্যপালকে বিঁধলেন মমতা