কলকাতা, 15 এপ্রিল: "আমি বাংলাকে ভালোবাসি ৷ আমি বাংলার পুত্র হতে চাই ৷ আমি বাংলার অঙ্গ হিসাবে পরিচিত হতে চাই ৷" পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে ঠিক এভাবেই বাংলায় ভাষণ দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস ৷ তাঁর এই প্রয়াস মন কেড়ে নিল উপস্থিত দর্শক ও শ্রোতাদের ৷ তবে, একইসঙ্গে নজর কাড়ল আরও একটি বিষয় ৷ এর আগে যে রাজ্যপালের মুখে শোনা গিয়েছিল 'জয় বাংলা' স্লোগান, এদিন তিনি তাঁর ভাষণ শেষে বললেন, 'জয় পশ্চিমবঙ্গ, জয় হিন্দ' !
রাজ্যপাল আগেই ঘোষণা করেছিলেন, 1430 সনের প্রথম দিন থেকেই রাজভবন হয়ে যাবে জন রাজভবন ৷ অর্থাৎ, এবার থেকে নির্দিষ্ট আবেদনের ভিত্তিতে আমজনতা রাজভবনের ভিতর ঢুকতে পারবে ৷ এদিন সকালে নববর্ষ উপলক্ষে এনসিসি প্যারেড, সাইক্লিং প্রভৃতি হয় ৷ পরে পূর্ব ঘোষিত 'হেরিটেজ ওয়াক' অনুষ্ঠিত হয় ৷ আর সবশেষে ছিল বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৷ সেই অনুষ্ঠানে মিনিট পনেরোর জন্য উপস্থিত হন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস ৷ আমন্ত্রিত অথিতিদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি ৷ সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ৷ সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই বাংলায় ভাষণ দিতে শোনা যায় রাজ্যপালকে ৷ তাঁর রচিত প্রার্থনা মন্ত্র পাঠ করেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ঊষা উত্থুপ ৷ উপস্থিত ছিলেন আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি ৷
এদিনের এই অনুষ্ঠানমঞ্চে রাজ্যপালের বাংলার শিক্ষাগুরু তথা হেয়ার স্কুলের শিক্ষক চিরঞ্জীব গঙ্গোপাধ্য়ায়কে গুরুদক্ষিণা দেন সি ভি আনন্দ বোস ৷ তারপরই শুরু হয় তাঁর বাংলা ভাষণ ৷ তিনি বলেন, "উপস্থিত অতিথিগণ, শুভ নববর্ষ ৷ আমি বাংলাকে ভালবাসি ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু, সত্যজিৎ রায়কে সম্মান করি ৷ আমি বাংলার পুত্র রূপে পরিচিত হতে চাই ৷ আমি পবিত্র বাংলার অঙ্গ হতে চাই ৷... জয় পশ্চিমবঙ্গ, জয় হিন্দ।" রাজ্যপালকে বাংলা কবিতার কয়েকটি লাইন আবৃত্তি করতেও শোনা যায় ৷
আরও পড়ুন: দক্ষিণেশ্বরে মানুষের ঢল, তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে মায়ের দুয়ারে ভক্তরা
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর সাধারণ মানুষ যেভাবে রাজভবনে প্রবেশ করেছিল, সেই ঘটনা স্মরণ করেই এদিন থেকে জনসাধারণের জন্য রাজভবনের দরজা খুলে দেওয়া হয় ৷ যদিও রাজভবনের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে আমজনতাকে ৷ কারণ, এই সময়সীমার মধ্যে কেবলমাত্র আমন্ত্রিতরাই রাজভবনের অন্দরে প্রবেশের ছাড়পত্র পাবেন ৷ সেই পর্যায় শেষ হলেই সাধারণ নাগরিকরা ভিতরে ঢোকার আবেদন জানাতে পারবেন ৷ তবে, এর জন্য তাঁদের কোনও টিকিট কাটতে হবে কিনা, সেটা এখনও স্পষ্ট নয় ৷