ETV Bharat / state

Garfa Skeleton Case: সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল কৌশিকের, গড়ফা কঙ্কালকাণ্ডে মত চিকিৎসকদের

author img

By

Published : Nov 24, 2021, 3:48 PM IST

সঠিক সময়ে চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল গড়ফা কঙ্কালকাণ্ডে (Garfa Skeleton Case) মানসিকভাবে অসুস্থ কৌশিক দে’র ৷ এমনটাই মনে করেন কেপিসি মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক তীর্থঙ্কর গুহ ঠাকুরতা ৷ পাশাপাশি তিনি যখন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন, তখন তাঁর কাছের বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় পরিজনদের পাশে পাননি বলেই একাকিত্ব থেকে বাবার মৃতদেহকে আগলে ছিলেন কৌশিক ৷

Garfa Skeleton Case Kaushik Dey Needed Treatment at Right Time Says Doctors
সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল কৌশিকের, গড়ফা কঙ্কালকাণ্ডে মত চিকিৎসকদের

কলকাতা, 23 নভেম্বর : পাথরের বা মাটির মূর্তির সঙ্গে কোনও ব্যক্তি যদি এক নাগাড়ে কথা বলেন তাঁকে ধার্মিক বলা হয় ৷ আর কোনও মৃত ব্যক্তির শরীরে পাশে থেকে যদি দীর্ঘদিন ধরে কোনও মানুষ দিন কাটায় বা তাঁর সঙ্গে কথা বলে বা তাঁকে যদি প্রার্থনা করে তাহলে সেই ঘটনাকে কি পাগলামি বলা হয় ? আসলে মৃত্যুটা একেকজনের কাছে এক এক রকম ৷ সম্প্রতি কলকাতা শহরের বুকে এমনই বেশকিছু নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে ৷ তিন নম্বর রবিনসন স্ট্রিটের কথা প্রত্যেকেরই মনে আছে ৷ এবার সেই ঘটনাকে ফের একবার উসকে দিল গড়ফার কঙ্কালকাণ্ড (Garfa Skeleton Case) ৷

এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয় একাধিক তথ্য আদান প্রদান করলেন কেপিসি মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক তীর্থঙ্কর গুহ ঠাকুরতা ৷ তিনি বলেন, ‘‘সমাজে মৃত্যুর পর যে আচার-আচরণ পালন করা হয় সেটা সব জায়গায় সমান নয় ৷ একজনের কাছে মৃত্যু শোকের হলে, অপরজনের কাছে সেটি আনন্দের হতে পারে ৷ আর সেই আনন্দকে কখনই আমরা পাগলামি বা মানসিক সমস্যা বলতে পারি না ৷’’

তীর্থঙ্করবাবু জানান, হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর দেহ সৎকার ও অন্যান্য রীতি পালন করা হয় ৷ কিন্তু, পৃথিবীর এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে মৃত্যুর পর দেহ সৎকার করা হয় না ৷ তা বলে কি তাদের পাগল বলে যেতে পারে ? তাহলে কি তাদের মানসিক সমস্যা আছে ?

আরও পড়ুন : Garfa Skeleton Case : রবিনসন স্ট্রিটের স্মৃতি ফিরিয়ে বাবার মৃতদেহের সঙ্গে তিনমাস কাটালেন ছেলে

তীর্থঙ্করবাবু জানান, ইন্দোনেশিয়া এবং ঘানায় বিভিন্ন জাতির মধ্যে মৃত্যুর পর দেহকে দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে ৷ তাহলে কি তারা প্রত্যেকেই পাগল বা তাদের মানসিক সমস্যা রয়েছে ? বা ঘানা প্রদেশে এমন বেশ কিছু জাতি এবং উপজাতি রয়েছেন ৷ যারা মৃত্যুর পরেও দেহকে বছরের পর বছর সংরক্ষণ করে রাখে ৷ মৃত্যুর পর তারা মনে করে একটি শরীর অন্য একটি জগতে পদার্পণ করে এবং সেখান থেকে সেই শরীরের উত্তোলন হচ্ছে ৷ এর পরেই তারা ওই মৃত শরীরের জন্য বিভিন্ন খাবার দাবার বিভিন্ন উপহার নিয়ে যান ৷ তাঁরা মনে করেন শরীরের মৃত্যু হয়েছে ৷ কিন্তু, সেই মানুষটির মৃত্যু হয়নি ৷ তাঁর চিন্তা-ভাবনা, তাঁর কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে ওই ব্যক্তি সবসময় তাঁদের কাছে রয়েছেন ৷ তাহলে কি বলা ঠিক, যে সেই সকল মানুষ মানসিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন বা তাঁরা পাগল ? একটা মানুষের মৃত্যু ঠিক সেই সময়ই হয়, যখন সমাজ তাঁকে ভুলে যায় ৷ শরীরের নিষ্পত্তির পরেই যে ব্যক্তি মানুষের মৃত্যু হয়, তেমনটা কিন্তু বলা যায় না ৷

সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল কৌশিকের, গড়ফা কঙ্কালকাণ্ডে মত চিকিৎসকদের

সোমবার সাতসকালে কলকাতার গড়ফা এলাকা থেকে 70 বছরের সংগ্রাম দে’র পঁচাগলা দেহ উদ্ধার হয় (Garfa Skeleton Case) ৷ ঠিক সেই কঙ্কালসার দেহের পাশেই প্রায় তিন মাস কাটিয়েছেন তার ছেলে কৌশিক দে ৷ সংগ্রামবাবুর বন্ধুরা যখন কালীপুজোর সময় তাঁর বাড়ি যান ৷ তখন তাঁর ছেলে বলেছিলেন, তাঁর বাবা সামাজিকভাবে মারা গেছে ৷ আর এই প্রসঙ্গ টেনে তীর্থঙ্করবাবু ইটিভি ভারতকে বলেন, ‘‘সামাজিকভাবে মৃত্যু মানেই এই নয় যে, সেই ব্যক্তিকে সমাজ ভুলে গেছে ৷ ’’ এ প্রসঙ্গে তীর্থঙ্করবাবু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয়েছে ৷ কিন্তু, আজও তিনি বেঁচে আছেন বাঙালির মনে ৷ তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে আজও মানুষ তাঁকে মনে রেখেছে ৷’’

কলকাতা, 23 নভেম্বর : পাথরের বা মাটির মূর্তির সঙ্গে কোনও ব্যক্তি যদি এক নাগাড়ে কথা বলেন তাঁকে ধার্মিক বলা হয় ৷ আর কোনও মৃত ব্যক্তির শরীরে পাশে থেকে যদি দীর্ঘদিন ধরে কোনও মানুষ দিন কাটায় বা তাঁর সঙ্গে কথা বলে বা তাঁকে যদি প্রার্থনা করে তাহলে সেই ঘটনাকে কি পাগলামি বলা হয় ? আসলে মৃত্যুটা একেকজনের কাছে এক এক রকম ৷ সম্প্রতি কলকাতা শহরের বুকে এমনই বেশকিছু নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে ৷ তিন নম্বর রবিনসন স্ট্রিটের কথা প্রত্যেকেরই মনে আছে ৷ এবার সেই ঘটনাকে ফের একবার উসকে দিল গড়ফার কঙ্কালকাণ্ড (Garfa Skeleton Case) ৷

এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয় একাধিক তথ্য আদান প্রদান করলেন কেপিসি মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক তীর্থঙ্কর গুহ ঠাকুরতা ৷ তিনি বলেন, ‘‘সমাজে মৃত্যুর পর যে আচার-আচরণ পালন করা হয় সেটা সব জায়গায় সমান নয় ৷ একজনের কাছে মৃত্যু শোকের হলে, অপরজনের কাছে সেটি আনন্দের হতে পারে ৷ আর সেই আনন্দকে কখনই আমরা পাগলামি বা মানসিক সমস্যা বলতে পারি না ৷’’

তীর্থঙ্করবাবু জানান, হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর দেহ সৎকার ও অন্যান্য রীতি পালন করা হয় ৷ কিন্তু, পৃথিবীর এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে মৃত্যুর পর দেহ সৎকার করা হয় না ৷ তা বলে কি তাদের পাগল বলে যেতে পারে ? তাহলে কি তাদের মানসিক সমস্যা আছে ?

আরও পড়ুন : Garfa Skeleton Case : রবিনসন স্ট্রিটের স্মৃতি ফিরিয়ে বাবার মৃতদেহের সঙ্গে তিনমাস কাটালেন ছেলে

তীর্থঙ্করবাবু জানান, ইন্দোনেশিয়া এবং ঘানায় বিভিন্ন জাতির মধ্যে মৃত্যুর পর দেহকে দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে ৷ তাহলে কি তারা প্রত্যেকেই পাগল বা তাদের মানসিক সমস্যা রয়েছে ? বা ঘানা প্রদেশে এমন বেশ কিছু জাতি এবং উপজাতি রয়েছেন ৷ যারা মৃত্যুর পরেও দেহকে বছরের পর বছর সংরক্ষণ করে রাখে ৷ মৃত্যুর পর তারা মনে করে একটি শরীর অন্য একটি জগতে পদার্পণ করে এবং সেখান থেকে সেই শরীরের উত্তোলন হচ্ছে ৷ এর পরেই তারা ওই মৃত শরীরের জন্য বিভিন্ন খাবার দাবার বিভিন্ন উপহার নিয়ে যান ৷ তাঁরা মনে করেন শরীরের মৃত্যু হয়েছে ৷ কিন্তু, সেই মানুষটির মৃত্যু হয়নি ৷ তাঁর চিন্তা-ভাবনা, তাঁর কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে ওই ব্যক্তি সবসময় তাঁদের কাছে রয়েছেন ৷ তাহলে কি বলা ঠিক, যে সেই সকল মানুষ মানসিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন বা তাঁরা পাগল ? একটা মানুষের মৃত্যু ঠিক সেই সময়ই হয়, যখন সমাজ তাঁকে ভুলে যায় ৷ শরীরের নিষ্পত্তির পরেই যে ব্যক্তি মানুষের মৃত্যু হয়, তেমনটা কিন্তু বলা যায় না ৷

সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল কৌশিকের, গড়ফা কঙ্কালকাণ্ডে মত চিকিৎসকদের

সোমবার সাতসকালে কলকাতার গড়ফা এলাকা থেকে 70 বছরের সংগ্রাম দে’র পঁচাগলা দেহ উদ্ধার হয় (Garfa Skeleton Case) ৷ ঠিক সেই কঙ্কালসার দেহের পাশেই প্রায় তিন মাস কাটিয়েছেন তার ছেলে কৌশিক দে ৷ সংগ্রামবাবুর বন্ধুরা যখন কালীপুজোর সময় তাঁর বাড়ি যান ৷ তখন তাঁর ছেলে বলেছিলেন, তাঁর বাবা সামাজিকভাবে মারা গেছে ৷ আর এই প্রসঙ্গ টেনে তীর্থঙ্করবাবু ইটিভি ভারতকে বলেন, ‘‘সামাজিকভাবে মৃত্যু মানেই এই নয় যে, সেই ব্যক্তিকে সমাজ ভুলে গেছে ৷ ’’ এ প্রসঙ্গে তীর্থঙ্করবাবু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয়েছে ৷ কিন্তু, আজও তিনি বেঁচে আছেন বাঙালির মনে ৷ তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে আজও মানুষ তাঁকে মনে রেখেছে ৷’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.