কলকাতা, 31 অগস্ট: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবারও 'পোশাক-ফতোয়া'। আবারও ঘটনাস্থল দক্ষিণ কলকাতার আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ। পড়ুয়াদের দাবি, প্রথম বর্ষে ভরতি সময় তাঁদের দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। "ছেঁড়া জিন্স বা অশালীন পোশাক পরব না"- এমন কথা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানালেই মিলছে ভরতির সুযোগ। বছর খানেক আগে একই কারণে শিরোনামে এসেছিল জগদীশচন্দ্র বসুর নামাঙ্কিত এই কলেজ। সেবার নির্দেশিকা জারি করে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। বক্তব্য প্রায় একই ছিল। এবার আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে সরাসরি মুচলেকা লিখতে হচ্ছে পড়ুয়াদের!
আরও পড়ুন: ছেঁড়া জিন্স পরে এলেই টিসি ! ফতোয়া কলকাতার কলেজে
ঠিক কেন এই ধরনের মুচলেকা লিখতে হচ্ছে। এই প্রশ্নের জবাব পেতে কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতির সঙ্গে কথা বলেছিল ইটিভি ভারত। তিনি বলেন, "গতবছর আমরা নির্দেশিকা দিয়েছিলাম। সেটা নিয়ে বিতর্ক হয়। তাছাড়া সেই নির্দেশিকা অনেকেই অমান্য করেছিলেন। আমি মনে করছি, এই ধরনের পোশাক পরা অশালীন। তাই কোনওভাবেই এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করব না। সেই কারণেই পড়ুয়াদের ভর্তির সময় হলফনামায় সই করিয়ে নিচ্ছি।" কলেজ পড়ুয়ারা অবশ্যই প্রাপ্ত বয়স্ক। তাঁরা কী ধরনের পোশাক পরবে তা কলেজ কি ঠিক করে দিতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে অধক্ষ্য জানান, পড়ুয়ারা কলেজে ঢুকলে তাঁর অধীনে। সে সময় তাঁর কথা মেনে চলতেই হবে। আবার কলেজের পর তাঁরা স্বাধীন। তখন তাঁরা কী করতে চান সেটা তাঁদের নিজস্ব বিষয়।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরনের ঘটনার কথা প্রায়শই শোনা যায়। সাম্প্রতিক অতীতে বেঙ্গালুরুতে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরা নিয়ে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এছাড়া এই ধরনের আরও বেশ কিছু ঘটনার কথা শোনা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশেও। শুধু তাই নয় এই বাংলাতেও শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে বিবাহিতা তরুণীদের। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের শুনতে হয়েছে শাখা পলা পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। এবার বছর দেড়েকের ব্যবধানে আবারও প্রশ্নের মুখে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ। এই ধরনের বিতর্ক পঠনপাঠনের জন্য মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয় বলেই মনে করছে শিক্ষক মহলের একটা বড় অংশ।
আরও পড়ুন: শাখা-পলা পরে টেট না-দিতে পারার প্রতিবাদে বিক্ষোভ বিজেপি মহিলা মোর্চার