কলকাতা, 9 জানুয়ারি: 'বাংলা ভুলি কি করে বাংলা বুকের ভিতরে...' মার্কিন মুলুকে থাকলেও মনে প্রাণে বাঙালি ৷ বিয়ে করতে তাই বিদেশ থেকে কলকাতায় আসছেন কনে ৷ সঙ্গে বিদেশী বর ও তাঁর পরিবার ৷ এই বিয়ে করতে এসে সংক্রান্তিতে কলকাতার গঙ্গা আরতির সাক্ষী থাকতে চলেছে বিদেশী বর ও বাঙালি কনে-সহ গোটা পরিবার ৷ তাদের স্বাগত জানাবে কলকাতা পৌরনিগম ৷ বিদেশী বরযাত্রীরা সকলে যাতে সুষ্ঠুভাবে বাজা কদমতলা ঘাটে এই গঙ্গা আরতি দেখতে পায়, তার জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা । সকলকে আনা ও নিয়ে যাওয়ার জন্য দুটো বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ সেগুলির পার্কিংয়ের দায়িত্ব নিয়েছে পৌরনিগম ।
আরতির দায়িত্বে থাকা কলকাতা পৌরনিগমের মেয়র পারিষদ সদস্য তারক সিং বলেন, "প্রত্যেকে বিদেশী । 64 জন আসছেন । কেউ চিকিৎসক, কেউ বিজ্ঞানী, কেউ গবেষক । তাঁদের নিরাপত্তার জন্য এবং তাঁরা যাতে সুষ্ঠুভাবে এই আরতি দেখতে পান সব ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে । তাদের আনা ও নিয়ে যাওয়া জন্য যে দুটো বিশেষ বাস থাকছে তার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করবে পৌরনিগম ।"
জানা গিয়েছে, প্রবাসী বাঙালি বসু পরিবার । কালীঘাটের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে দীর্ঘ দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস তাদের । সেখানেই জন্মেছেন অন্বেষা বসু । তিনি পেশায় চিকিৎসক । বিদেশে জন্ম থেকে কর্ম হলেও দেশের সঙ্গে নিবিড় টান তাঁর । এখনকার ঐতিহ্য বিন্দুমাত্র ভোলেননি । তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছে সেই দেশের বাসিন্দা পেশায় শিল্পপতি ম্যাক্স মিলিয়নের সঙ্গে । মার্কিন মুলুকে থাকলেও বাঙালি মতেই বিয়ে করতে চলেছেন অন্বেষা ৷ তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কলকাতায় আসছেন প্রবাসী বাঙালি কন্যা ও হবু বিদেশী বর । সঙ্গে আসছেন বরপক্ষের শখানেক আত্মীয় ।
হিন্দু মতে, সবার প্রথম বিয়েতে গঙ্গাকে আমন্ত্রণ করতে হয় ৷ সেই আমন্ত্রণ করতে গিয়ে বর ও কনে-সহ পরিবার দেখবে বাজা কদমতলা ঘাটে গঙ্গা আরতি । তাও আবার সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে হওয়া বিশেষ আরতি । বাঙালির দুর্গাপুজো বিশ্বজনীন হয়েছে । পেয়েছে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি । বছর খানেক হয়নি কলকাতায় শুরু হয়েছে বাজা কদমতলা ঘাটে বারাণসীর আদলে গঙ্গা আরতি ৷ এরই মধ্যে বিদেশিদের মন জয় করে ফেলবে এই আরতি, ভাবতে পারেননি কেউই ।
কনের পরিবারের সদস্য সুনন্দা চন্দ বলেন, "বিদেশ থেকে আসা 64 জন যাবেন আরতি দেখতে । তারা কেউ বোস্টন, কেউ নিউইয়র্ক আবার কেউ ক্যালিফোর্নিয়া বাসিন্দা । বিদেশী হলেও আমাদের দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার ভীষণ আগ্রহ তাঁদের । সেই সূত্রে নেট ঘেটে সকলেই প্রায় জেনেছেন কলকাতার এই গঙ্গা আরতি সম্পর্কে ৷ এরপরেই সেই সুন্দর মুহূর্তের সাক্ষী থাকার আবদার করেন তাঁরা । আর তাই বিয়ের প্রাক্কালে প্রথা মেনে গঙ্গা আমন্ত্রণ করতে যেমন যাওয়া হবে, একই সঙ্গে সংক্রান্তিতে এই আরতি দেখা হবে । বিয়ের পাত্র ম্যাক্স ও তাঁর মা, তাদের আত্মীয় সকলেই সেখানে হাজির থাকবেন । তাঁরা যাতে সুষ্ঠুভাবে গঙ্গা আরতি দেখতে পান, সেজন্য স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলাম । কথা হয়েছিল দেবাশিস কুমার ও তারক সিংয়ের সঙ্গে । তাঁরাই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ।"
আরও পড়ুন: