কলকাতা, 10 অগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুতে ফের ব়্যাগিংয়ের বিষয়টি উঠে আসছে ৷ বুধবার রাতে হোস্টেলের নীচ থেকে বাংলা বিভাগের পড়ুয়ার ক্ষতবিক্ষত এবং প্রায় জামাকাপড়বিহীন রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় ৷ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷
স্বপ্নদীপের বাড়ি নদিয়ার বগুলার কলেজপাড়া এলাকায় ৷ ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা যাদবপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ৷ পুলিশ সূত্রের খবর, স্বপ্নদীপের পরিবার পুলিশের কাছে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে ৷ স্বপ্নদীপকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব়্যাগিং করা হয়েছিল ৷
এই বিষয়টি নিয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টের কাছে জানানো হয়েছিল ৷ এরপরেও কোনও অভ্যন্তরীণ তদন্ত হয়নি ৷ কেন হল না, এনিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, এই ঘটনা ঘটার আগের রাতে অর্থাৎ বুধবার রাতে স্বপ্নদীপ তাঁর মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছিলেন ৷ ফোনে পড়ুয়া জানিয়েছিলেন, তাঁর এখানে পড়াশোনা করতে ভয় করছে ৷ ভালো লাগছে না ৷
আরও পড়ুন: ভরতি হয়েছিলেন দু'দিন আগেই, যাদবপুরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যু
পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার তাঁদের ফোন করে জানানো হয় হোস্টেলের ছাদ থেকে নীচে পড়ে গিয়েছেন স্বপ্নদীপ ৷ তাঁরা যখন রওনা দিয়েছেন, তখনও ফোনে জানানো হয় স্বপ্নদীপের মৃত্যু হয়েছে ৷ তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ছাত্রকে র্যাগিং করে ছাদের উপর থেকে ছুড়ে নীচে ফেলে দেওয়া হয়েছে ৷
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন অবস্থায় রয়েছে ৷ হোস্টেলের সুপারভাইজারি বডি না-থাকায় র্যাগিং মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ৷ অভিযোগ, সেই ভয়ানক র্যাগিংয়ের সম্মুখীন হয়েই মৃত্যু হয়েছে স্বপ্নদীপের ৷
এরই মধ্যেই যাদবপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ৷ ঘটনাস্থল ভালোভাবে ঘুরে দেখেন তদন্তকারীরা ৷ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারাও ৷ তবে এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি লালবাজারের বড় কর্তারা ৷
আরও পড়ুন: ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের বদনাম হচ্ছে, হাইকোর্টে অভিযোগ আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষের
নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক উপ-নগরপাল পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক জানান, ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে ৷ দেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেলে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে আরও সুবিধা হবে ৷ হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলা হচ্ছে ৷ মৃত পড়ুয়ার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গেও কথা বলে তাঁদের বিবৃতি রেকর্ড করার প্রক্রিয়া চলছে ৷ মৃত পড়ুয়ার সহপাঠীদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা ৷ যেখান থেকে স্বপ্নদীপের দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷