কলকাতা, 5 অক্টোবর: স্কুলের সিলেকশন টেস্টে যদি পাশ না হয়, তবে একাদশ শ্রেণিতে সুযোগ মিলবে না । তাই ইন্টারনেট দেখে মাত্রাতিরিক্ত প্রেসারের ওষুধ খেয়ে মৃত্যু হল কলকাতার এক নামী স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রের । মৃত ছাত্রের নাম নীলাদ্রি মান্না । বয়স 15 বছর ৷ পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিতলির জন্য নীলাদ্রির মৃত্যু হয়েছে ৷ ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে যাদবপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালকে ।
নীলাদ্রির বাবা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক । বাড়ি 20 নম্বর নাকতলা রোডে । পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, সামনের বছর সিবিএসই পরীক্ষা দিত নীলাদ্রি । পুজোর পরই সিলেকশন টেস্ট ছিল তার ৷ আর ওই পরীক্ষায় পাশ করতে পারলেই একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ মিলত নীলাদ্রির । স্কুলে ভালো ছাত্র হিসাবেই পরিচিত ছিল সে । প্রত্যেক ক্লাসে দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় হত নীলাদ্রি ৷ গত কয়েকদিন ধরে দিনরাত এক করে পরীক্ষার জন্য পড়াশোনাও করছিল সে । কিন্তু 2 তারিখ বিকেল থেকে আচমকা তার মনের মধ্যে অস্বস্তি শুরু হয় । রাতে পরীক্ষার চিন্তায় শুতে পারছিল না । বারবার উঠে পড়ছিল । চারদিকে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব । তাই তার বাবা ভেবেছিলেন হয়তো ডেঙ্গি সংক্রমণ হয়েছে । তাই পরদিন এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে ।
বাবা কৌশিক মান্না বলেন, "হাসপাতালের চিকিৎসক বিশ্বনাথ সেনশর্মা ছেলেকে দেখেন । ভরতির নির্দেশ দেন । আচমকা নীলাদ্রি চিকিৎসকের কাছে এসে বলে গুগল সার্চ করে মানসিক চাপ কমাতে 15টি প্রেসারের ওষুধ খেয়ে নিয়েছে সে । 10টি 5 এমজি এবং 5টি 10 এমজির ওষুধ । নীলাদ্রি আরও বলে, মা বাবা চিন্তা করবে । দয়া করে ওদের বলবেন না ।" নীলাদ্রির বাবার অভিযোগ, "ছেলে প্রেশারের ওষুধ খেয়েছে ঠিকই । কিন্তু দিনভর কোনও চিকিৎসক তাকে দেখেনি হাসপাতালে । সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি হওয়ায় বারবার উঠে বসছিল সে । চিকিৎসককে ফোন করেছিলাম । তবে চিকিৎসক আসেননি । শেষ পর্যন্ত আমাদের অনুমতি ছাড়াই ওকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় । বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নীলাদ্রি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে ।"
আরও পড়ুন: 24 ঘণ্টা পরও সন্ধান মিলল না দক্ষিণেশ্বরের নিখোঁজ স্কুলছাত্রের
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার নীলাদ্রির বাবা কৌশিক মান্না হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিতলির অভিযোগ নিয়ে থানার দ্বারস্থ হয়েছেন । তাঁর কথায়, এর শেষ দেখে ছাড়ব । প্রয়োজনে মেডিক্যাল কমিশনে যাব ।