কলকাতা, 13 অগস্ট: বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। 2024-এ দিল্লির ভোটকে সামনে রেখে ঘর গোছানোর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসক থেকে বিরোধী 24-এর নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে সকলে। এই অবস্থায় রবিবার উত্তমমঞ্চে তৃণমূল সমর্থক আয়োজিত ফ্যাম কনক্লেভে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার দাবি উঠল। এই অনুষ্ঠানের মূল স্লোগান ছিল ‘বলছে বাংলার জনতা, প্রধানমন্ত্রী হোক মমতা’। যদিও সরাসরি দলীয় সংগঠনের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি বলে দাবি তৃণমূলের। তবে এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের একাধিক প্রথম সারির নেতা । মঞ্চে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, কুণাল ঘোষ থেকে শুরু করে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা । তাঁরা এই মঞ্চকে ব্যবহার করে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন এদিন ।
এদিন উত্তম মঞ্চে তাৎপর্যপূর্ণভাবে উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে হলুদ সেনার। এটাই ছিল এই অনুষ্ঠানের ড্রেস কোড। হলুদ সেনার সামনে বিজেপির মিডিয়া উইং-কে আটকাতে সক্রিয় হওয়ার ডাক দিলেন নেতৃত্ব। এই মঞ্চ থেকে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, "বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই অত্যন্ত কঠিন লড়াই। এরা শুধু সাম্প্রদায়িক দল নয়, এরা এক দেশ-এক দল-এক নেতায় বিশ্বাস করে। একমাত্র তাদের রাজনৈতিক দলই ভারতবর্ষে থাকবে। এছাড়া কোনও রাজনৈতিক দল ভারতবর্ষে থাকবে না। ওরা নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ পদ্ধতি চেঞ্জ করে দিচ্ছে। ওরা সবকিছু চেঞ্জ করে দিচ্ছে। ওরা চেষ্টা করছে ভারতবর্ষকে করায়ত্ব করতে। অনেকেই তাদের দেখে পিছিয়ে গিয়েছে। অনেকেই ভয় পেয়েছে একমাত্র মমতা বন্দোপাধ্যায় ব্যতিক্রম যিনি ওদের কাছে মাথা নত করেননি। লড়াই চলছে ইন্ডিয়া তৈরি হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এক হয়েছে। অনেকে ভাবছেন আবার হয়তো নরেন্দ্র মোদি জিতবেন। কিন্তু এবার তেমনটি হবে না বন্ধু।"
রাজ্যের অপর মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, "পরেরবার স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লায় আর দাঁড়িওয়ালা লোকটা ভাষণ দেবেন না। বাংলায় আপনি খুনখারাপি, সন্ত্রাসের কথা বলছেন। রাতে শুয়ে শুয়ে বাংলার কথাই ভাবেন। গত দেড় মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেফারেন্স ছাড়া মোদি কোনও বক্তব্য রাখেননি। কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন যে তাঁকে পালটে দিতে পারে, তিনি একমাত্র মতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 21 জুলাইয়ের আগে দিদি’ আমাকে বলেন, ওই কথাটা বলবে না। কিন্তু আমাদের হৃদয়ের আওয়াজ কীভাবে থামাবেন? প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্যতম প্রার্থীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভুলে গেলে চলবে না-বলছে বাংলার জনতা, প্রধানমন্ত্রী হোন মমতা।"
এদিন এই মঞ্চ থেকে 42-এ 42 এর ডাক দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, "জোট জমানা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দলনেত্রী এ ক্ষেত্রে উদার। তিনি বলেছেন চেয়ার চাই না, চাই বিজেপি বিদায় হোক। দলীয় তরফ থেকে আমরা সে কথা বলছি না। কিন্তু আপনারা ভালোবাসার জায়গা থেকে একথা বলতেই পারেন ভুলে গেলে চলবে না যখন জ্যোতি বসু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ডাক পেয়েছিলেন। তখন তাদের দলের সাংসদ সংখ্যা কত ছিল! নিশ্চয়ই তা 200 ছিল না। আমরা বলছি আমরা চেয়ার চাই না। কিন্তু 24 এর ভোটে 42-এ 42 আসনের জন্য ঝাঁপাব আমরা।"