কলকাতা, 27 মার্চ: কথায় আছে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। এবার সেই পদ্ধতি অবলম্বন করতে উদ্যোগী রাজ্য পরিবেশ দফতরও। ব্যাকটেরিয়া মারতে আর এক ব্যাকটেরিয়াকেই কাজে লাগাতে চাইছে পরিবেশ দফতর (WBPCB used Bacteria to Kill Bacteria)। ব্যাকটেরিয়া দিয়ে ব্যাকটেরিয়া নিধনে 'আইআইএসইআর' (IISER)-র সুপারিশ মেনে পরীক্ষামূলক পর্বে দারুণ সাড়া মিলেছে বলেই দাবি পরিবেশ দফতরের। রাজ্যের পরিবেশ বিভাগের স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান এবং সেপটিক ট্যাঙ্কগুলিতে, মারণ ব্যাকটেরিয়া ফিকাল কলিফর্ম ছিল। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পরিবেশ দফতরের প্রতিনিধিরা সেই ট্যাংকে নতুন এক ব্যাকটেরিয়া ফেলে দেন । পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যাকটেরিয়াগুলো ট্যাংকের ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া খেয়ে শেষ করে ফেলেছে ।
রাজ্যের পরিবেশ মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূইয়াঁ বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (ডব্লিউবিপিসিবি) অফিসে ফায়ার ফাইটিং রিজার্ভার রয়েছে ৷ আমরা গত 8 ডিসেম্বর, 2022-এ মাইক্রোবিয়াল কনসোর্টিয়াম চার্জ করেছি । যখন মোট ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ছিল 9 লাখের বেশি। 11 জানুয়ারী, 2023-এ এটি 2400-এ নেমে এসেছে এবং 16 মার্চ এটি আরও 1400-এ নেমে এসেছে। এটি জাদুর মতো কাজ করেছে । এখন আমরা এটিকে সেপটিক ট্যাঙ্কে এবং স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টেও প্রয়োগ করেছি। সেখানেও ফলাফল অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক হয়েছে।"
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (WBPCB) চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, "Biochemical oxygen demand স্তরের পাশাপাশি গঙ্গার দ্রবীভূত অক্সিজেন স্তর সাম্প্রতিক অতীতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রত্যক্ষ করেছে। তবে, প্রায় চার দশক ধরে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার সমস্যা মোকাবিলার সমস্ত প্রচেষ্টা নিরর্থক প্রমাণিত হয়েছে। আমরা আশাবাদী যে গঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত এসটিপিগুলিতে মাইক্রোবিয়াল কনসোর্টিয়ামের চার্জ করা কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়াকে ভালভাবে নির্মূল করবে।"
আরও পড়ুন: আগামী 5 এপ্রিল থেকে ফের রেল রোকো আন্দোলনের ডাক কুড়মি সমাজের
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ গন্ধ এবং মিথেন গঠন কমাতে লিগ্যাসি ডাম্পসাইটগুলিতে এই কনসোর্টিয়ারের সঙ্গে আরও পরীক্ষা চালিয়ে যাবে। এছাড়াও এই ধরনের ডাম্পসাইটগুলিতে প্রায়শই আগুন লাগে ৷ ব্যাকটেরিয়া কাজে লাগিয়ে কীভাবে তার মোকাবিলা করা যায় তারও প্রচেষ্টা চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে। মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া বলেন, "আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ফিকাল কলিফর্ম মোকাবিলায় অর্জিত সাফল্যের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেব। যদি তিনি আমাদের প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেন, আমরা এটি রাজ্য পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন বিভাগ এবং পৌর বিষয়ক বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহার করব ।"