কলকাতা, 3 নভেম্বর: বিগত বছরগুলিতে উৎসবের সময় রাজ্যে যে হারে শব্দ (Sound Pollution) ও বায়ু দূষণ হত, 2022 সালের উৎসবে ততটা হয়নি । বরং অনেকটাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে । বৃহস্পতিবার রাজ্য পরিবেশ ভবনে (Environment Department) সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই দাবি করলেন পরিবেশ মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়া (Manas Bhunia)। এই ঐতিহ্যকে বজায় রেখে আগামী দিনে রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন নতুন পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান তিনি (Pollution Control)।
মন্ত্রীর কথায়, "আগামী সপ্তাহ থেকে গোটা রাজ্যজুড়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সচেতনতা শিবির গড়ে তোলা হবে । তার জন্য প্রতিটি জেলার পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ, মিউনিসিপ্যালিটি থেকে শুরু করে কর্পোরেশন, ব্লক থেকে জেলাশাসক, ওসি থেকে এসপি সমস্ত প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এলাকাভিত্তিক বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে । পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকেও ঐক্যবদ্ধ করে দূষণ নিয়ন্ত্রণের সচেতনতা শিবির করবে রাজ্য পরিবেশ দফতর । স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে পরিবেশ সচেতনতা সেমিনারও করা হবে এবং প্রত্যেকটি মিটিং এবং সেমিনারে আমি সশরীরে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করব । কারণ দূষণ নিয়ন্ত্রণে (WBPCB) রাখতে গেলে কড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি জনসচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তাই মানুষকে আগে সচেতন করে তোলাটাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ।"
রাজ্য পরিবেশ দফতরের গত 10 বছরের ইতিহাস বলছে যে, কোনও সময় দূষণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, সচেতনতার প্রশ্ন তুলে ধরে প্রশাসনিক মহল । কিন্তু তারপরেও একশ্রেণির মানুষ সচেতন হন না ৷ লাগাতার দূষণ মূলক কাজ করে চলেন । তাঁদের বিরুদ্ধে কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ? এ প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, "আমরা নীতি নির্ধারক সংস্থা । আমাদের সঙ্গে অনেকগুলো সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা যুক্ত রয়েছে । তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে বলব ওই সমস্ত আইন লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে । কিন্তু প্রথমেই আমরা খড়গহস্ত হয়ে রাস্তায় নামতে পারি না । গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে লাগাতার সচেতন করে তারপরেও যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ অপরাধ করে থাকে, তারপরেই তো কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হয় । আমরাও সেভাবে পুলিশ প্রশাসনকে করা পদক্ষেপ করার কথা বলব ।"
আরও পড়ুন: দিল্লির দূষণ রোধে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের পরামর্শ মন্ত্রীর, তোপ বিজেপিকে
অপরাধীদের বিরুদ্ধে যে পরিবেশ দফতর কড়া পদক্ষেপ করছে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, "পরিবেশ দফতর এবং প্রশাসন যে কাজ করছে এ বারের উৎসবে অবৈধ বাজি বাজেয়াপ্ত এবং একাধিক ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়েরই তার অন্যতম উদাহরণ ।" পরিবেশ দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের উৎসবে প্রায় 15 হাজার কেজি অবৈধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । যার মধ্যে প্রায় 9 হাজার 700 কেজি বাজি কলকাতায় উদ্ধার করা হয়েছে । একই রকম ভাবে অবৈধ বাজির সঙ্গে যুক্ত ক্রেতা ও বিক্রেতা-সহ গোটা রাজ্যজুড়ে প্রায় 270 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এফআইআর করা হয়েছে 274 জনের বিরুদ্ধে, জিডি করা হয়েছে 286 জনের বিরুদ্ধে অর্থাৎ সবমিলিয়ে 560 জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে ।"