কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর : বিহারে গা ঢাকা দিয়েছিল তারা । আজ ট্রেনে কলকাতা স্টেশনে আসার কথা ছিল । কলকাতা স্টেশনের কাছে অপেক্ষা করছিল আবুল কাশেম । ওই 11 জন জঙ্গির সঙ্গে দেখা করে তারা চলে যেত গোপন আস্তানায় । কিন্তু তার আগেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে ধরা পড়ে যায় কাশেম । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই গোয়েন্দারা জানতে পারে এই 11 জনের কথা । STF জানাচ্ছে, জামাত-উল-মুজাহিদিনের এক মাথা সালাউদ্দিনের নির্দেশেই এই 11 জন জঙ্গি কলকাতায় আসে । কিন্তু কেন? গোয়েন্দাদের সন্দেহ, দিন কয়েক আগে STF-র হাতে ধৃত ইজ়াজ় আহমেদকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ছক রয়েছে জঙ্গিদের । আর সেই সূত্রেই তারা জড়ো হচ্ছে কলকাতায় । একইসঙ্গে অস্তিত্বের জানান দিতে নাশকতার পরিকল্পনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা ।
এই রাজ্যে সক্রিয়তার সঙ্গেই কাজ করছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স । একের পর এক ধরপাকড়ের জেরে জামাত জঙ্গিদের শীর্ষনেতারা আর এই রাজ্যকে নিরাপদ বলে মনে করছে না । যদিও এখনও ছদ্মবেশে বেশ কয়েকটি জেলায় কাজ করে চলেছে তারা । কিন্তু শীর্ষ নেতারা লুকিয়েছে দক্ষিণের কিছু রাজ্য, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে । পর্যবেক্ষণ গোয়েন্দাদের । দিন কয়েক আগেই গয়ার বুনিয়াদপুরের পাঠানতলি থেকে ইজ়াজ় আহমেদকে গ্রেপ্তার করে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স । সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে পরিচয় গোপন করে দু'বছর লুকিয়েছিল JMI-র বর্তমান প্রধান ইজ়াজ় আহমেদ । সেখানে সে নিজের পরিচয় দিয়েছিল রাজমিস্ত্রি হিসেবে । তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রচুর তথ্য পেয়েছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স । সেই তথ্য অনুযায়ী তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর বিস্ফোরক । পুলিশ জানতে পেরেছে, সিরিয়াল ব্লাস্টের পরিকল্পনা করছিল ইজ়াজ় । সেই কারণেই জড়ো করা হচ্ছিল বিস্ফোরক ।
STF সূত্রে খবর, আজ ধৃত কাশেমের কাছ থেকে পাওয়া গেছে বেশ কিছু লিফলেট, অডিয়ো রেকর্ডার ও পেনড্রাইভ । যেখানে নানা জিহাদি বিষয় রয়েছে । বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা কাশেম জানিয়েছে, ওই 11 জনের সঙ্গে তার কলকাতায় বৈঠকের কথা ছিল । 11 জনের মধ্যে রয়েছে জামাতের এক শীর্ষ নেতাও । তবে কী বিষয়ে বৈঠক, তা এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি জানতে পারেননি গোয়েন্দারা । কাশেমকে আজ আদালতে তোলা হলে 14 দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক । এবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সব তথ্যই জানা যাবে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা । সূত্র জানাচ্ছে, ওই 11 জঙ্গির প্রায় সবাই বাঙালি । তবে তারা গা ঢাকা দিয়েছে বিহারে ।
এর আগে বোমারু মিজ়ান ওরফে কওসরকে আদালতে নিয়ে আসার পথে ছিনিয়ে নেওয়ার ছক কষেছিল জামাত-উল-মুজাহিদিনের সদস্যরা । সেই ছক ছিল ইজ়াজ়ের । সেই মোতাবেক রেইকিও করা হয় । এবিষয়ে এর আগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে । ওই মামলায় ইজ়াজ়ের নাম ছিল 6 নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে । ইজ়াজ়কে গ্রেপ্তারের পর থেকেই গোয়েন্দাদের সন্দেহ ছিল, তাকেও ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হতে পারে । সেই আন্দাজমাফিক ব্যাপক নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে । গোয়েন্দাদের ধারণা, তার পরেও তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার সব চেষ্টাই করতে চাইছে জঙ্গিরা ।