কলকাতা, ১৭ মার্চ: কোরোনা আতঙ্কে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা এক মাস ছুটি । হঠাৎ এই ছুটির কারণে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা প্রথম থেকেই রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে । কীভাবে এর মোকাবিলা করা যাবে তা নিয়ে আজ রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । জানা গিয়েছে, ছুটির সময়ে জরুরি কাজকর্মের জন্য উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষকের দপ্তর খোলা রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী । এছাড়া, হস্টেলে থাকা পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি ৷ পাশাপাশি বিদেশি পড়ুয়াদের নিয়ে উপাচার্যদের ভাবনাচিন্তা করতে বলা হয়েছে ৷
ক্রমশ বাড়ছে কোরোনা ভাইরাসের দাপট । গোটা বিশ্বের পাশাপাশি এদেশেও বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা ৷ বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও । এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছেন । গত ১৬ মার্চ থেকে রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছুটি শুরু হয়ে গেছে । বর্তমানে চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেমে সেমিস্টার ব্যবস্থা চলছে রাজ্যের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে । সেক্ষেত্রে এই টানা এক মাসের ছুটিতে পঠন-পাঠন ব্যাহত হতে পারে । কীভাবে এই ছুটির সময়টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা থেকে পঠন-পাঠন চালানো যেতে পারে তা নিয়ে আজ রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা সচিব মনীশ জৈনও ।
জানা গেছে, মূলত কোরোনা নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বৈঠকে । এক মাসের ছুটির পরেও পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে আসবে তা নিয়ে সন্দিহান সকলেই । বর্তমানে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কলেজগুলিতে CBCS চালু হয়ে গেছে । এই ব্যবস্থার অধীনে এখন সেমিস্টার সিস্টেমে সেশন চলে । তার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করতে হয় । কিন্তু এক মাসের ছুটিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ থাকবে পড়াশোনা । তাই সেমিস্টার সিলেবাস কীভাবে শেষ হবে সেই সব বিষয়ে আজ আলোচনা হয়েছে । এছাড়া, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়েই স্কেলেটন স্টাফ দিয়ে প্রধান দপ্তরগুলো খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ৷ প্রশাসনিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কন্ট্রোলার অব এগজামিনেশন, ফাইনান্সের অফিস খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । এই ছুটির কারণে সেমিস্টার সেশন পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে । তাই নিয়েও বিশদে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে । সিলেবাস শেষ করতে সময় বাড়ানো হবে, নাকি সেশন শেষ হওয়ার সময় পর্যন্ত যতটা সিলেবাস সম্পূর্ণ হবে তার উপরেই পরীক্ষা নেওয়া হবে, এই ধরনের বিভিন্ন অপশন নিয়ে আজ আলোচনা হয়েছে বৈঠকে । তবে, উপাচার্যদের একাংশের মতে হয়তো সেশন পিছিয়ে যেতে পারে । এছাড়া, এই সময়ে পড়ুয়াদের কোনও অসুবিধা না হয় সেদিকটাও দেখতে বলা হয়েছে উপাচার্যদের । বিশেষত হস্টেলে থাকা পড়ুয়াদের বিষয়টি । যারা চাইবে তারা বাড়ি চলে যেতে পারে ৷ কিন্তু বিদেশি পড়ুয়াদের মতো যারা হস্টেলে থাকবে তাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে ৷