কলকাতা, 28 মার্চ: রাজ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা যাবে কি না, তা খতিয়ে দেখতে 6 সদস্যের একটি কমিটি গঠন করল উচ্চশিক্ষা দফতর (Six Members Committee to Implementation of NEP) ৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সুরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে কাজ করবে এই কমিটি ৷ আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর ৷
যে নির্দেশিকা জারি করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কমিটির দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই রাজ্যের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে তিন বছরের পরবর্তী চার বছরের স্নাতক চালু করা হবে কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৷ এই কমিটিতে সভাপতি অধ্যাপক সুরঞ্জন দাস ছাড়াও রয়েছেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নির্মল নারায়ণ চক্রবর্তী, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ হায়ার এডুকেশনের ভাইস-চেয়ারপার্সন অধ্যাপক কৌশিকী দাশগুপ্ত এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ হায়ার এডুকেশনের কনভেনার ডক্টর মৌমিতা ভট্টাচার্য ৷
তবে, কমিটিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অধ্যাপককে সদস্য হিসেবে রাখা হয়নি ৷ সেই নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন ৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভানেত্রী অধ্যাপক মহালয়া চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নয়া শিক্ষানীতির পাঠ্যক্রম ও ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক চালু করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি ছয় সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে ৷ রাজ্যের সবচেয়ে পুরনো ও বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়কে সেই কমিটিতে রাখা হয়নি ৷ যার অধীনে প্রায় দু’শো স্নাতকস্তরের কলেজ রয়েছে ৷ সেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও প্রতিনিধি এই কমিটিতে নেই ৷
সরকারের এই সিদ্ধান্তে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ক্ষুব্ধ এবং অপমানিত বলে জানান অধ্যাপক মহালয়া চট্টোপাধ্যায় ৷ বৃহত্তর ক্ষেত্রে একুশ শতকের কোনও উচ্চশিক্ষা বিষয়ক কমিটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কোনও অধ্যাপক নেই বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ শিক্ষা দফতরের এই সিদ্ধান্তকে রাজ্য সরকারের দূরদর্শিতা এবং দিশাহীনতার অভাব বলে কটাক্ষ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভানেত্রী ৷
আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষাবর্ষেই রাজ্যে জাতীয় শিক্ষা নীতি, স্নাতক ডিগ্রির মেয়াদ 4 বছর
এই বিষয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের কথায়, ভারতের প্রায় সব রাজ্য আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট 3+2 বছর থেকে 4+1 কাঠামোয় কীভাবে যাওয়া যায় ? সে নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল ৷ সেখানে বর্তমান পরিকাঠামোর কথাও চিন্তা করা হয়েছিল ৷ কিন্তু, তখন এই রাজ্যের সরকার কোনও কিছু না করে চুপ করে বসে ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ আর এখন শেষ মুহূর্তে তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছে শিক্ষা দফতর ৷ তিনি এও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষেই নতুন পরিকাঠামো লাগু না করলে সমস্যা হবে ৷ পুরো ভারতের শিক্ষা কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের পড়ুয়া পিছিয়ে পড়বেন বলে জানান পার্থপ্রতিম রায় ৷