কলকাতা, 21 মার্চ: রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে (Recruitment Scam) এ বার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অবসরপ্রাপ্ত সচিব (Board of Primary Education's secretary) রত্না চক্রবর্তী বাগচীকে তলব করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা । আজ বেলা 12টার মধ্যে সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি সঙ্গে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে একাধিক নথি । জানা গিয়েছে, টেটের প্যানেলের নথি সমেত তাঁকে তলব করা হয়েছে ।
কাকতালীয় হবে ওই একই নথি মিলেছে ইডির হাতে ধৃত সল্টলেকের প্রোমোটার অয়ন শীলের বাড়ি এবং অফিস থেকে । এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রের খবর, সমনপত্রে স্পষ্ট ভাবে বলা আছে যে, 2012 এবং 2014 সালের টেটের প্যানেলের যে সব নথি আছে, সেই সব নথি-সহ তাঁকে হাজিরা দিতে হবে ।
মূলত অয়ন শীলের বাড়ি থেকে উদ্ধার 2014 এবং 2012 সালের টেটের যে প্যানেল তালিকা রয়েছে, সেই প্যানেল তালিকা এবং শিক্ষা সংসদের সচিবের দেওয়া 2014 এবং 2012 সালের প্যানেল তালিকার যাবতীয় তথ্য মিলিয়ে দেখবেন গোয়েন্দারা । এ ভাবে অয়ন শীলের বাড়িতে উদ্ধার হওয়া নথিপত্র সঠিক কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে ৷ তবে জানা গিয়েছে, রত্না চক্রবর্তী বাগচী নিজে হাজির না হয়ে, তাঁর দুই আইনজীবীকে পাঠাচ্ছেন ইডি দফতরে ৷
ইতিমধ্যেই 2014 সালের টেটের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় তদন্তে নেমেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা । সেইমতো ধৃত হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করে, তাঁর হুগলির একাধিক সম্পত্তির হদিশ পায় ইডি । আর সেখান থেকেই জানা যায় অয়ন শীলের নাম ও পরিচয় । জানা যায়, অয়ন শীলের একটি অফিস রয়েছে সল্টলেকের এফডি ব্লকে । এরপরেই হুগলি থেকে সরাসরি অয়ন শীলকে নিয়ে আসা হয় তাঁর সল্টলেকের অফিসে । প্রায় 37 ঘণ্টা ধরে চলে চিরুনি তল্লাশি এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ।
আরও পড়ুন: 2014 নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বেরিয়ে এল 2012 সালের নথি, সেখানেও দুর্নীতির আশঙ্কা ইডি-র
গোয়েন্দাদের হাতে আসে 2014 সালের প্যানেল তালিকা থেকে শুরু করে 2012 সালের প্যানেল তালিকা । এ ক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের অনুমান, শুধুমাত্র যে 2014 সালে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি হয়েছিল তেমনটা নয়, বরং এই দুর্নীতির বীজ বপন হয়েছিল 2012 সালেও । ফলে অয়ন শীলের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া এই 2012 সালের টেটের যে প্যানেল তালিকা পাওয়া গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে চান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
এ ছাড়াও অয়ন শীলের অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক ওএমআর শিট । জানা গিয়েছে, প্রোমোটার হিসেবে একাধিক প্রভাবশালীদের তুষ্ট করার ফলে অয়ন শীল রাজ্যের একাধিক পৌরসভায় কাজের বরাত পেতেন । তদন্তকারীদের এও অভিযোগ যে, শুধু শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি নয়, বরং পৌরসভাতেও একাধিক নিয়োগ হয়েছে এবং সেই বেআইনিভাবে নিয়োগ সংক্রান্ত ঘটনায় অয়ন শীল-সহ রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব যুক্ত রয়েছেন ।