কলকাতা, ১৩ অক্টোবর: কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তকে সামনে রেখে এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম তাদের নামে মিথ্যা খবর প্রচার করছে দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই মামলায় শুক্রবার ইডির তরফে হাইকোর্টে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, তারা রুজিরার বিরুদ্ধে কী অভিযোগে সমন পাঠিয়েছে বা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তা তাদের ওয়েবসাইটে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জনসমক্ষে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে ৷ তাই বড় সংবাদমাধ্যমগুলিতে যদি এই নিয়ে ভুল খবর পরিবেশন করা হয় তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া যেতে পারে ৷ কিন্তু ছোট ছোট ডিজিটাল পোর্টাল ও ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে যে ভুল প্রচার হচ্ছে তার বিরুদ্ধে তাদের কিছু করার নেই । এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয় ৷
পাশাপাশি, ইডির তরফে হাইকোর্টে জানানো হয়েছে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা এই মামলা আদালতে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না এবং বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যকে ইডির তরফে অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে এমন কোনও নির্দেশ বিচারপতি না দেন যার জন্য শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত ব্যহত হয় । এদিন এই মামলার শুনানিতে ইডির কাছে বিচারপতি জানতে চান, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে কি রুজিরা অভিযুক্ত ? ইডির তরফে জানানো হয় সরাসরি অভিযুক্ত নন রুজিরা । কিন্তু সন্দেহ করা হচ্ছে তাঁকে এবং তাঁর যোগের বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ৷
ইডি' তরফে আদালতে এদিন আরও জানানো হয় যে, তারা কোনও গসিপ ম্যাগাজিন নয় । ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী এদিন আদালতে বলেন, "আমরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । সাধারণ মানুষের অবগতির জন্য আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে সমস্ত কিছু জানাচ্ছি । তা সত্ত্বেও ইডির বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে । এই মামলায় যেকোনও নির্দেশ তদন্তের গতিপ্রকৃতিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে ।"
আরও পড়ুন: আইআইটি ছাত্র মৃত্যুর মামলায় সিটের তদন্ত রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট
এদিন বিচারপতি জানতে চান, ইডির কোনও আধিকারিক কখনও কি কোনও তথ্য সংবাদমাধ্যমে গোপনে জানাচ্ছে ? কিন্তু ইডির তরফে পরিষ্কার জানান হয়, তারা গোপন কিছু কাউকে আলাদা করে বলছে না । সবটাই তাদের ওয়েবসাইটে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানানো হয় । এদিন এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে । তবে আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি । আগামী ১৭ অক্টোবর এই মামলার রায় দেবেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য । এর আগে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাগরিকত্ব নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্র । কারণ খাতায় কলমে তিনি থাইল্যান্ডের নাগরিক। একজন বিদেশি নাগরিক কী করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে আদালতে আবেদন জানান, সেই প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রের সহকারী অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল । এছাড়া বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে রুজিরার আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেছিলেন, গোপনীয়তার অধিকার খর্ব করা হয়েছে, এই বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন । তখন বিচারপতি মন্তব্য করেন, "মামলার আবেদন শুনে মনে হচ্ছে গোটা রাজ্যের নিয়ন্ত্রক কালীঘাট থানা !"