কলকাতা, 31 অক্টোবর: কিছুদিন আগেই রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি । গ্রেফতারির পর দীর্ঘ টালবাহানা এবং একাধিক সময়ে একাধিক নাটকীয় ঘটনা শেষে বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতাল থেকে গতকাল রাতে প্রথমবারের জন্য সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে পা রাখেন ধৃত মন্ত্রী । আজ দুপুর বারোটা থেকে তাঁকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । তবে এখনও পর্যন্ত যা খবর, মন্ত্রীর দেওয়া জবাবে সন্তুষ্ট নন ইডি কর্তারা ৷
প্রথম দফায় দশটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমানে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হওয়া জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে । জানা গিয়েছে, এই 10 টি প্রশ্নের তালিকা সরাসরি দিল্লি থেকে পাঠানো হয়েছে । একাধিক জায়গা থেকে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পাশাপাশি বিভিন্ন লোককে জিজ্ঞাসাবাদ এবং পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ের মাধ্যমে এই দশটি প্রশ্ন দিল্লি থেকে অর্থাৎ ইডির সদর দফতর থেকে কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর ।
দুপুর বারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে জেরা করা হয় । সূত্রের খবর, এরপর কিছুটা খাওয়া দাওয়া করে ও বিশ্রাম নিয়ে, তাঁর নিয়মিত ওষুধগুলি খেয়ে ফের জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হন জ্যোতপ্রিয় । তবে তাঁর জবাবে ইডি কর্তারা খুব-একটা খুশি নন বলে খবর ৷ জানা গিয়েছে, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর কৌশলগতভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন মন্ত্রী ৷ ইডি সূত্রের খবর, 2017 থেকে 2019 সালের মধ্যে সঠিক কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছিল এবং রেশন দুর্নীতি কীভাবে হয়েছিল সেই বিষয়ে তাঁর কিছু মনে নেই বলে ইডি কর্তাদের কাছে দাবি করেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতেই জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি
রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা সরাসরি অভিযোগ এনেছেন যে, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত বাকিবুর রহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের । বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানার জন্য কিছুদিন আগেই সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হয়েছিল মন্ত্রীর প্রাক্তন আপ্ত-সহায়ক অমিত দে-কে । তবে তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, তিনি প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রতিবেশী ছিলেন । তিনি তাঁর পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে খুব কম দিনের জন্য কাজ করেছেন । তবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে ইতিমধ্যেই এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে যেগুলি দেখে তদন্তকারীরা মোটামুটি স্পষ্টভাবেই বুঝতে পারছেন যে, ধৃত বাকিবুরের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার লেনদেন ছিল জ্যোতিপ্রিয়র ৷
মূলত রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্য একাধিক ব্যবসায় নেমেছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমান ।
ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, বিভিন্ন এজেন্ট মারফত এবং নিজের দু'জন পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে মাস গেলে কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করতেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ৷